Connect with us

Highlights

রাজশাহীতে সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ধর্মব্যবসা সাম্প্রদায়িকতা ও মাদকের বিরুদ্ধে করণীয় শীর্ষক হেযবুত তওহীদের বিভাগীয় আমির সম্মেলন অনুষ্ঠিত

Published

on

আবু রায়হান, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
গত কয়েক বছর ধরে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সবকটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মাদক, নারী নির্যাতন, ধর্ষনসহ যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনসচেতনামূলক কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। জঙ্গিবাদকে ইস্যু করে একটির পর একটি মুসলিম দেশকে যখন ধ্বং সকরে দেওয়া হচ্ছে, বাংলাদেশকে নিয়েও যখন একই ষড়যন্ত্র চলছে তখন দেশকে নিরাপদ রাখতে ষোল কোটি মানুষকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া অপরিহার্য। হেযবুত তওহীদ এই ষোলকোটি মানুষের মাঝে ঐক্য সৃষ্টির জন্য নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার (২৬এপ্রিল) সকাল ১০ টায় রাজশাহী জেলার পদ্মা কমিউনিটি সেন্টার হলরুমে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত অরানৈতিক আন্দলোন হেযবুত তওহীদের রাজশাহী বিভাগের সকল পর্যায়ের সভাপতি/সম্পাদকদের নিয়ে বিভাগীয় আমির সম্মেলন-২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আমির সম্মেলনে হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুয্যামান মনির এর সভাপতিত্বে মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাকীব আল হাসান।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শফিকুল আলম উখবা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ যোবায়ের আহম্মেদ নূহু, রাজশাহী বিভাগীয় হেযবুত তওহীদের নারী বিষয়ক সম্পাদক আফরোজা মনির, রাজশাহী জেলা হেযবুত তওহীদের সভাপতি মোঃ আলফাজ হোসেন (মুকুল) প্রমুখ।
উক্ত আমির সম্মেলনে মূখ্য আলোচক রাকীব আল হাসান তার বক্তব্যে বর্তমান সময় অত্যন্ত ভয়াবহ। মানুষ অন্য সৃষ্টির মতো নয়, আল্লাহ তার মধ্যে অসম্ভব চিন্তাশক্তি দান করেছেন, কাজেই এই সময় নিয়ে মানুষকে ভাবতে হবে, চিন্তা করতে হবে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত বিশ্বের বহু দেশ, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো। এখন আমাদেরকে এটা নিয়ে ভাবতে হবে, সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। অন্যথায় ধর্মব্যবসায়ীরা ধর্মবিশ্বাসী সাধারণ মানুষের ঈমানকে ভুলখাতে প্রবাহিত করে দেশে সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটাতেই থাকবে। ফলে আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিকেও ইরাক-সিরিয়ার মতো করুণ পরিণতি বরণ করতে হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন একটি সঠিক আদর্শের। এই সঠিক আদর্শটি হেযবুত তওহীদের কাছে আছে।
তিনি আরো বলেন এই ভয়ঙ্কর সঙ্কট থেকে রক্ষা করতে পারেন একমাত্র মহান আল্লাহ। এই সঙ্কটে পড়ে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়া ইত্যাদি দেশ ধ্বং সহয়ে গেছে, এখন যদি বাংলাদেশকে এই সঙ্কট থেকে বাঁচাতে হয় তবে একমাত্র উপায় হলো আমাদের মো’মেন হওয়া। কারণ মো’মেনের সাথে আল্লাহর ওয়াদা, তিনি মো’মেনদের রক্ষা করবেন, তিনি মো’মেনদের অভিভাবক। আর এই মো’মেন হতে হলে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যায় যে-ই করুক তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে ইসলামের নামে আমাদের সমাজে বহু অনৈসলামিক কার্যক্রম চলছে। এগুলো আল্লাহর সুলের ইসলাম নয়। তিনি প্রকৃত ইসলাম ও বিকৃত ইসলামের রূপ তুলে ধরে বলেন, প্রকৃত ইসলাম মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, শত্রুকে ভাই বানিয়েছিল, আরবের অবজ্ঞাত, উপেক্ষিত, অশিক্ষিত একটা জাতিকে শ্রেষ্ঠজাতি, শিক্ষকের জাতিতে পরিণত করেছিল। আর বর্তমানের বিকৃত ইসলাম মানুষের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে, এক জাতিকে হাজার হাজার ফেরকা, মাজহাব, দল-উপদলে ভাগ করে পরস্পর শত্রুতে পরিণত করে।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি, মুসলিমজাতির করুণ দুর্দশার চিত্র, বাংলাদেশের পরিস্থিতি ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি কীভাবে হলো, কীভাবে পরাশক্তিরা মুসলমানদের ঈমানকে কিছু ভাড়াটে আলেমদের মাধ্যমে হাইজ্যাক করে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি করল সেটাও ইতিহাসের আলোকে তুলে ধরেন। হেযবুত তওহীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, মানবজাতির মধ্য থেকে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, অনৈক্য, ভেদাভেদ দূরকরে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য রসুলাল্লাহ (সা.) এর প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা তুলে ধরে মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ। এটা করার জন্য হেযবুত তওহীদের সদস্যরা তাদের জীবন ও সম্পদ মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করে যাচ্ছেন। এই কাজের পুরস্কার তারা মহান আল্লাহর নিকট আশা করেন, তারা এর বিনিময়ে পার্থিব কোনো স্বার্থ আশা করেন না। তাদের কোরবানীর বিনিময়েই হেযবুত তওহীদ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে। কাজেই হেযবুত তওহীদের কোনো আর্থিক ও রাজনীতিক স্বার্থ নেই। হেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে যাবতীয় অপপ্রচারের জবাব দেন এবং হেযবুত তওহীদের বৈধতার দলিলপত্র উপস্থাপন করেন। হেযবুত তওহীদ যে গত ২৪ বছরে একটিও আইন ভঙ্গ করেনি তার স্বপক্ষে আদালতের রাইয়ের শত শত কপি সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। দেশবাসীর প্রতি তিনি ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান করে বলেন, ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রচারিত ধর্মের অপব্যাখ্যা থেকে বের হয়ে আমাদের ধর্মের প্রকৃত চেতনা দ্বারা জাতিকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
এ সময়ে প্রধান অতিথি শফিকুল আলম উখবা তার বক্তব্যে বলেন ধর্ম এসেছে মানবতার কল্যাণে আর ধর্মকে ব্যবহার করে সন্ত্রস সৃষ্টি করা বৈষিয়িক স্বার্থ উদ্ধার করা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচার করাকে কোন ধর্মই অনুমোদন দেয় না তবুও ধর্মের নামেই চলছে এসব অধর্ম। এ অবস্থায় ধর্মের প্রকৃত ধর্মের শিক্ষা সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরার কোন বিকল্প নেই। সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে নিঃস্বার্থভাবে ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরার কাজটিই করে যাচ্ছে মানবতার কল্যাণে নিবেদিত অরানৈতিক আন্দলোন হেযবুত তওহীদ। আজ বাংলাদেশের মানুষ চরম সংকটময় পরিস্থিতিতে বসবাস করছে তার কারণ হলো বর্তমানে যে ধর্ম আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত আছে সেটা প্রকৃত ধর্ম নয়, একটি অসাধু কুচক্রি মহল সাধারণ ধর্মভিরু মানুষের ধর্মিয় মন-ঈমানকে হাইজ্যাক করে তাদের ধর্মবিশ্বাশকে ভূলখাতে প্রবাহিত করে দেশে নৈরাজ্য ও হানাহানি ও অশান্তি জনক কর্মকান্ডে লিপ্ত করছে। এ চরম সংকটময় পরিস্থিতি থেকে জাতির মুক্তির পথ নিয়ে হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমাম মাননীয় এমামুয্যামানের অনুসারিরা মানবতার কল্যাণে নিজেদের জীবন সম্পদ উৎসর্গ করে সারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নিঃসার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
উক্ত আমির সম্মেলনের সভাপতি মনিরুয্যামান মনির তার বক্তব্যে বলেন দুনিয়াময় এই মুসলিম জাতির উপর কী অবর্ণনীয় দুর্দশা চলছে তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে কারন কেউ যেন আমাদের ধর্ম বিশ্বাসকে ভ’লখাতে ব্যাবহার করে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদি কর্মকান্ডে লিপ্ত করতে পারে। সারা দেশে ওয়াজ মাহফিল, আলোচনা, বক্তৃকা, সেমিনার অনেকই হলো কিন্তু সমাধান এলোনা এবার একটু থেমে সুস্থ মাথায় চিন্তা করতে হবে আমরা আসলে কোন পথে এগোচ্ছি জানতে হবে যে, আজ মানবজাতি যে পথ ধরে এগোচ্ছে সেটা সঠিক পথ কিনা, যদি সঠিক পথে থাকি তাহলে আজ এমন পরিস্থিতি কেন, আর যদি পথ হারাই তাহলে সেটা কোথায় হারিয়েছি, কখন হারিয়েছি তা নিয়ে ভাবতে হবে তানাহলে আমাদের এ জাতি বিনাশ হয়ে যাবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে হেযবুত তওহীদের রাজশাহী জেলা হেযবুত তওহীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এ,কে,এম রাশেদ হাসান এর সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন থেকে তেলোয়াত করেন বিশিষ্ঠ্য আলেম মোঃ মেহেদী হাসান সাগড়।