রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হাড়িয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ
স্পোর্টসডেস্ক: শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার এডিলেড ওভালে বাংলাদেশর করা ২৭৫ রানের জবাবে ৪৮.৩ ওভারে ইংল্যান্ড অলআউট হয়ে গেলো ২৬০ রানে। এই হারে বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় ঘটলো শিরোপার অন্যতম ফেভারিট ইংল্যান্ডের।
শেষ মুহূর্তে তৈরী হয়েছিল টান টান উত্তেজনা। শ্বাসরূদ্ধর পরিস্থিতিতে যখন বাংলাদেশের প্রয়োজন আর ২ উইকেট, ওই সময় ৪৮তম ওভারের তৃতীয় বলে তাসকিন আহমেদের বল খেলতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন ক্রিস ওকস। বাংলাদেশের জয়ের পথে যিনি শেষ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু লং অনে দাঁড়িয়ে থাকা তামিম ইকবাল সহজ ক্যাচটি ফেলে দিয়ে পুরো বাংলাদেশকে শঙ্কায় ফেলে দেন।
৪৯তম ওভারে বল করতে আসেন রুবেল হোসেন। ১২ বলে তখন ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ১৬ রান। প্রথম বলেই স্টুয়ার্ট ব্রডকে বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন তিনি। দ্বিতীয় বল কোনমতে ফেরান এন্ডারসন। এরপর তৃতীয় বলেই জেমস এন্ডারসনকে বোল্ড করে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেন। সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে লাফিয়ে ওঠে পুরো এডিলেড। সেই আনন্দের ঢেউ একই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাংলাদেশেও।
২৭৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু প্রায় এনে দিয়েছিলেন রুবেল হোসেন। ওভারের পঞ্চম বলেই আউট সুইঙ্গার বলটি খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন ইংলিশ ওপেনার মঈন আলি। একসঙ্গে আউটের আবেদন জানান বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। আম্পায়ার পল রেইফল সাথে সাথে লেগবিফোর আউটের আঙ্গুল তুলে দিলেন।
সঙ্গে সঙ্গে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রিভিউ চেয়ে বসেন মঈন আলি। রিভিতে দেখা গেলো রুবেলের বলটিই পিচ করেছে লাইনের বাইরে। আউট সুইং করে বলটি শেষ পর্যন্ত লেগ স্ট্যাম্পও পুরোপুরি মিস করতো। যে কারণে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে বদলে নট আউটই ঘোষণা করা হলো মঈনকে। রিভিউ থাকায় বেঁচে গেলেনে ইংলিশ ওপেনার। আর শুরুতেই ব্রেক থ্রু হলো না বাংলাদেশের।
শেষ পর্যন্ত অষ্টম ওভারে এসে রানআউট হয়ে গেলেন মঈন আলি। আরাফাত সানির একটি বল থেকে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ইয়ান বেলের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হলেন তিনি।
মঈন আলি আউট হলেও ইয়ান বেল আর আলেক্স হেলস মিলে ৫৪ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। শেষ পর্যন্ত আলেক্স হেলসকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এরপর রুবেল চমক। ক্রমেই ভয়ানক রুপে আবির্ভুত হওয়া ইয়ান বেলকে আউট করেন বাংলাদেশের তুখোর পেসার রুবেল হোসেন। ব্যক্তিগত ৬৩ রানে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন বেল। এর ঠিক তিন বল পরেই আবারো রুবেল ঝলক। চতুর্থ বলেই রুবেল ফেরান ইংলিশ অধিনায়ক মরগ্যানকে। তিন বলে মাত্র শুন্য রানেই সাকিব আল হাসানের ক্যাচ দেন মরগান।
গতির ঝড়ে রুবেলের পর নাম লেখান তরুন পেসার তাসকিন আহমেদ। দলীয় ১৩২ রানের মাথায় টেইলরকে স্লিপে দাঁড়ানো ইমরুল কায়েসের হাতে তালুবন্দী করেন তিনি। চার বলে মাত্র এক রান করে সাজঘরে ফেরেন টেইলর।