শৈলকুপায় কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বহু গ্রাম লণ্ডভণ্ড ৩ দিন পরও খোলা আকাশের নিচে শত শত পরিবার : ত্রাণের জন্য হাহাকার
মনিরুজ্জামান সুমন, ঝিনাইদহ :
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে কয়েকটি গ্রামের বহু বাড়িঘর লন্ডভন্ড ও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ৩ দিন পার হলেও ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় মানুষের দ্বারে ত্রাণ-সামগ্রী না পৌছানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করছে ভুক্তভোগী হাজারো পরিবার। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার জানান, বরাদ্দ কম থাকায় ইউনিয়ন প্রতি ১ মেঃটন চাউল বরাদ্দ করা হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার সারুটিয়া, দিগনগর, কাঁচেরকোল, হাকিমপুরসহ পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে গত সোমবার ভোর রাতে কাল বৈশাখী ঝড় ও সেই সাথে প্রচন্ড শিলা বৃষ্টি আঘাত হানে। এর মধ্যে সারুটিয়া ইউনিয়নের পুরাতন বাখরবা, চরবাখরবা, ব্রহ্মপুর, ছোট মৌকুড়ী, বড়মৌকুড়ী, চরমৌকুড়ী, নবগ্রাম, গোয়ালবাড়িয়া, কির্ত্তীনগর, ভুলুন্দিয়া, ভাটবাড়িয়া, গোসাইডাঙ্গা, কৃষ্ণনগর, বড়–রিয়া, নাদপাড়া কাঁচেরকোল ইউনিয়নের খন্দকবাড়িয়া, কাঁচেরকোল, মির্জাপুর, জাঙ্গালিয়া, ধুলিয়াপাড়া, কচুয়া, দিগনগর ইউনিয়নের সিদ্ধি, হাকিমপুর ইউনিয়নের দোহারো, হাকিমপুর ও শৈলকুপা পৌরসভার অনন্তবাদালশো, চরআউশিয়া, বাজারপাড়া, চতুড়া, বালিয়াডাঙ্গা, সাতগাছি, হাজামপাড়া, কাজীপাড়া, মালিপাড়া, কোর্টপাড়া, ফাজিলপুর, সরকারপাড়া, মজুনদারপাড়া, নগরপাড়া, কবিরপুর, হাবিবপুর অন্যতম। এসব এলাকায় কালবৈশাখীর ভয়াল ছোবল আর প্রচন্ড শিলা পড়ায় বাড়িঘর, গাছপালা, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ মাঠের উঠতি যাবতীয় ফসল নষ্ট হয়েছে। চরমৌকুড়ী গ্রামে সাদেক আলীর পোল্টি ফার্মে অন্তত ৪ হাজার মুরগী মারা গেছে, দেয়াল ও ছাউনি উড়ে গেছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। এর মধ্যে কাতলাগাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাকাইসিদ্ধি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাঁচেরকোল কলেজ, কচুয়ার শিশুকুঞ্জ কিন্ডার গার্টেন ও মৌবন নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা অন্যতম।
ক্ষতিগ্রস্থ এসব এলাকায় খোলা আকাশের নিচে কোনহালে দিন কাটাচ্ছে বহু মানুষ। হাকিমপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জিকু জানান, ইউনিয়ন প্রতি মাত্র ১ মেঃ টন চাউল বরাদ্দ হওয়ায় গড় হিসাবে ৩শ গ্রাম চাউল পাওয়া যাবে জেনে ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে চাউল নিতে অনিহা প্রকাশ করেছে। একই চিত্র অন্যান্য ইউনিয়নের।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার বলেন, পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় ত্রাণের একটু সমস্যা হয়েছে তবে, দু-এক দিনের মধ্যেই ঝড় কবোলিত এলাকায় ত্রাণ পৌছে যাবে।