Connect with us

জাতীয়

সর্বধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় জাতীয় প্রেসক্লাবে হেযবুত তওহীদের আলোচনা সভা

Published

on

Hezbut Tawheed Program Dhaka (3)

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ‘সকল ধর্মের মর্মকথা – সবার ঊর্ধ্বে মানবতা’ এই স্লোগানকে ধারণ করে ধর্মীয় উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে করণীয় প্রসঙ্গে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (৮ জুন ২০২৪ ইং) বিকাল ০৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া কনফারেন্স হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে হেযবুত তওহীদ ঢাকা বিভাগ।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদের সর্বোচ্চ নেতা এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। সভাপতির বক্তব্যে তিনি হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও শত্রুতার সূত্রপাতের জন্য ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ নীতিকে দায়ী করেন। তিনি প্রতিটি ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে চিরন্তন ন্যায় ও সত্যের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করতে, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করতে, উভয় গোষ্ঠীর ভিতরকার দেওয়ালগুলোকে ভেঙে ফেলে মানবজাতিকে এক পরিবার হবার আহ্বান জানান।

হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক ও দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লি. এর চেয়ারম্যান ড. শাজাহান মাহমুদ, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ পূজা উদপাযন পরিষদের সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনোবধি ভিক্ষু, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, ঢাবি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ, ঢাবি অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ঢাবি অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, লেখক ও কলামিস্ট হাসান আজাদ, খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ সিএবি’র মহাসচিব ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার বাপ্পি, বাংলাদেশ আন্তঃধর্মীয় লেখক ও সাংবাদিক সমিতির সভাপতি চিত্র ফ্রান্সিস রিবেরু, বাংলাদেশ সাংবাদিক পরিবার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সহ-সভাপতি রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের য্গ্মু সাধারণ সম্পাদক শ্রীমতি পদ্মাবতী দেবী প্রমুখ।

ড. শাজাহান মাহমুদ বলেন, এখন মানুষ অনেক উন্নত হয়েছে। মানুষ ব্যাকওয়ার্ড চিন্তাভাবনাকে নিতে পারে না। সাম্প্রদায়িক চিন্তভাবনা দিয়ে উপরের দিকে ওঠা যায় না। আপনারা পাহাড়েরর উপরের দিকে যাচ্ছেন। হেযবুত তওহীদ যে চেতনা নিয়ে কাজ করছে তা অত্যন্ত কঠিন কাজ।

শ্রী বাসুবেদ ধর তার বক্তব্যে বলেন, ইংরেজি রিলিজিয়ান শব্দের অর্থ ধর্ম হয় না, কারণ ধর্ম অর্থ ধারণ করা। আগুনের ধর্ম পোড়ানো, পানির ধর্ম ভেজানো সে হিসেবে মানুষের ধর্ম হওয়া উচিত মনবতা। কিন্তু আমরা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলিম ইত্যাদি ধর্মে বিভক্ত। এরা একে অপরকে খারাপ মনে করছি। আজকে সরকার অসাম্প্রদায়িক হলেও সমাজটা সাম্প্রদায়িক রয়ে গেছে। ধর্মের নেতারাই ধর্মান্ধতা প্রচার করেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জিনোবধি ভিক্ষু বলেন, আমাদের মূল পরিচয় যদি মানুষ হয়, শ্রেষ্ঠ জীব হয় তাহলে পৈশাচিক কাজ কিভাবে হচ্ছে? মানুষের মান ও হুশ থাকতে হবে। প্রজ্জাদীপ্ত জীবনের জন্য ধর্মকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। তাহলে অস্ত্র দেখলে মানুষ যেমন ভয় পায় ধর্মকে দেখেও মানুষ ভয় পাবে।

সুকোমল বড়ুয়া বলেন, বৈষম্য সবসময় ছিল, অনার্য যুগেও ছিল। এখন আমরা কত গগনচুম্বী উচ্চতায় পৌঁছেছি। মানুষ এক হবে না, চিন্তায় বৈচিত্র্য থাকবেই। তবে সনাতন ধর্ম বলছে, সকল মানুষ অমৃতের পুত্র। বৌদ্ধ ধর্ম বলছে, মানবজন্ম লাভ করা বড়ই দুর্লভ। খ্রিস্টান ধর্ম বলছে, মানুষ ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। ইসলামে বলা হয়েছে মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। অর্থাৎ ঘুরে ফিরে সার কথা প্রায় একই।

এছাড়াও হেযবুত তওহীদের তথ্য সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, ঢাকা বিভাগের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজসহ দেশের স্বনামধন্য মিডিয়া ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে হলরুম ছিল পরিপূর্ণ।

আগত অতিথিবৃন্দ একে একে প্রতিপাদ্যের উপর আলোচনা রাখেন এবং তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন।

আলোচকরা অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপরে সহমত পোষণ করেন। তারা হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমের এই সংগ্রামী মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। তার সাহসীকতার প্রসংশা করেন এবং এই উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *