Connecting You with the Truth

সিরাজ, লতিফ ও আকরামের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার:
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বাগেরহাটের সিরাজুল হক সিরাজ মাস্টার, আব্দুল লতিফ ও আকরাম হোসেন খাঁনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেছেন প্রসিকিউশন। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর সায়্যেদুল হক সুমন ও শেখ মুশফিক কবির। পরে প্রসিকিউটর সুমন সাংবাদিকদের বলেন, বাগেরহাটের এ তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে একাত্তর সালে হত্যা, গণহত্যা, লুণ্ঠন ও ধর্মান্তরিতকরণসহ ৯টি ভলিউমে ৫ খণ্ডে কেস ডায়েরি করে অভিযোগ দাখিল করেছি। মোট আটটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ একসঙ্গে দাখিল করা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে সিরাজ মাস্টারের বিরুদ্ধে ছয়টি এবং আব্দুল লতিফ ও খাঁন আকরামের বিরুদ্ধে ৪টি করে অভিযোগ আনা হয়েছে। আজ বা যেকোনো দিন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানির দিন ধার‌্য করতে পারেন বলেও জানান তিনি। এর আগে গত ২৫ আগস্ট এ তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দেন তদন্ত সংস্থা। প্রসিকিউশন এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এ। সিরাজ মাস্টার, লতিফ ও আকরামের বিরুদ্ধে ৯টি খণ্ডে প্রমাণপত্রসহ ১ হাজার ৮৪৪ পৃষ্ঠার তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত দল দীর্ঘ তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে এ চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করেন। এ তিনজনের বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও ধর্মান্তরের ৮টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী করা হয়েছে জব্দ তালিকার ৪ জনসহ ৬৮ জনকে। ট্রাইব্যুনাল-১ গত ১০ জুন এ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। কচুয়া থানা পুলিশ গত ১১ জুন পলাতক আসামি আ. লতিফ তালুকদারকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে। গত ১৯ জুন অপর পলাতক আসামি আকরাম হোসেন খাঁনকে রাজশাহী থেকে মোড়েলগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করে। সর্বশেষ দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গত ২১ জুলাই রাত ১১টায় বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা গ্রামে মৃত মোসলেম পাইকের (তার চাচা শ্বশুর) পরিত্যক্ত খুঁপড়ি ঘর থেকে সিরাজ মাস্টারকে গ্রেফতার করে। তাদেরকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার এবং তার দুই সহযোগী আ. লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেন খাঁন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাগেরহাটের কচুয়ায় শাঁখারিকাঠি বাজারে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে একটি মামলার আসামি। এদের মধ্যে সিরাজ মাস্টার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন এবং তিনি বাগেরহাটের কসাই বলে কুখ্যাত। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কচুয়ার শাঁখারিকাঠি বাজারে গণহত্যার শিকার রঘুদত্তকাঠি গ্রামের শহীদ জিতেন্দ্র নাথ দাসের ছেলে নিমাই চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ২০০৯ সালে কচুয়া থানায় এ তিনজনসহ ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

Comments
Loading...