‘সেক্স রোবট’ প্রস্তুতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে প্রচারণা শুরু
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: যৌনকর্মে ব্যবহার হয় এমন রোবট তৈরিতে নিষেধাজ্ঞার দাবিতে একটি প্রচারণা শুরু হয়েছে। আন্দোলনকারীদের নেতা ড. ক্যাথরিন রিচার্ডসন বলেছেন, এ ধরণের প্রযুক্তি অপ্রয়োজনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য।
‘সেক্স ডল’ বলে পরিচিত যেসব পণ্য এখন বাজারে পাওয়া যায়, সেগুলোকে আরো আধুনিক করা হচ্ছে এবং এখন আশা করা হচ্ছে এসব প্রযুক্তির সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যোগ করা হবে।
লিইচেস্টারের ‘ডে মন্টফোর্ট ইউনিভার্সিটির’ রোবট বিশেষজ্ঞ ড. রিচার্ডসন বলছেন, ‘রোবট শিল্পে এখন ক্রমবর্ধমান হারে নজর দেয়া হচ্ছে সেক্স রোবটের দিকে। এগুলি দেখতে কেমন হবে, কি কাজ সেগুলোকে দিয়ে করানো হবে তার নকশা তৈরি করা হচ্ছে, যা খুবই পীড়াদায়ক।’
অ্যাবিস ক্রিয়েশনস নামে একটি প্রতিষ্ঠান যেটি পুরুষ ও মহিলাদের ‘সেক্স টয়’ বিক্রি করে, সেটি এখন তাদের পণ্যকে যান্ত্রিক করে তুলতে শুরু করেছে।
আর ‘ট্রু কম্প্যানিয়ন’ ঘোষণা করেছে তারা ‘বিশ্বের প্রথম ‘সেক্স রোবট’ তৈরি করছে। এ বছরের শেষ দিকে তাদের প্রথম এ ধরণের রোবট ‘রক্সি’(Roxxxy) বাজারে আসবে বলেও তারা ঘোষণা দিয়েছে।
সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী ডগলাস হাইনস বিশ্বাস করেন রক্সির মতো পণ্যের সত্যিকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একজন স্ত্রী সরবরাহ করছি না, কিংবা বান্ধবীর কোনও বিকল্প দিচ্ছি না। এটা তাদের জন্য সমাধান যারা স্ত্রী হারিয়েছেন কিংবা এই মুহূর্তে কোনও সম্পর্কের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন না’।
তবে ড. রিচার্ডসন বলছেন, এর ফলে মহিলাদের সম্পর্কে প্রাচীন সেই ধারণাটিই পোক্ত হবে যেখানে মহিলাদেরকে যৌন-সঙ্গী বলে আর কিছুই মনে করা হয় না।
অনেকদিন আগে থেকেই পুরুষ এবং মহিলাদের সেক্স খেলনা বিক্রি হয়। এখন তার মধ্যে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ইমপুট করা হচ্ছে অর্থাৎ রোবট সেক্স খেলনা বের হতে যাচ্ছে।
হাইনেস বলেন, মানুষ, মানুষের সঙ্গ ছাড়াও এই রোবটের মাধ্যমে যেন সুখ পেতে পারে সেই জন্যই আমরা এটা করছি।
তিনি জানান, রক্সি রোবট স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলাচলের পাশাপাশি তার মালিকের সঙ্গে কথা বলতে পারবে এবং তার পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে বুঝতে পারবে।
তিনি আরো জানান, সেক্স রোবটের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কটা একটা ছোট ব্যাপার। এর সাথে অনেকটা সময় গল্পগুজব করে সামাজিকভাবে সময় অতিবাহিত করতে পারবে।
তবে ব্যাপক জটিলতার কারণে কিছু বিশেষজ্ঞ রক্সি রোবটের মতো ‘বুদ্ধিমান মেশিন’ তৈরির দাবী সম্পর্কে সন্দিহান। দামের দিকটাও বিবেচ্য। হাইনেস জানিয়েছেন, বাজারে আসা প্রথম সেক্স রোবটের প্রতিটির দাম পড়বে ৭ হাজার পাউন্ড।
কিউরান ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সিনিয়ন সদস্য ডাঃ কেভিনের ধারণা, সেক্স রোবট একটি বড় বাজার সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। তবে সাধারণ জনগণের দিক থেকে একটি ধাক্কা যে আসবে সেটাও মনে করেন তিনি।
ডাঃ কেভিনের মতো ‘লাভ এন্ড সেক্স’ বইয়ের লেখক ডেভিড লেভিরও ধারণা, ২০৫০ সাল নাগাদ রক্সির মতো সেক্স রোবটের বিশাল বাজার হবে। এছাড়া রোবট এবং মানুষের মধ্যে একটি সাধারণ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে বলেও ধারণা তার। তিনি বলেন, সম্পর্ক হারা মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং এই রোবটে সেই শূন্যস্থান পূরণ হবে।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর