Connecting You with the Truth

হাতীবান্ধায় ঝুলছে রেল লাইন-বন্ধ ট্রেন, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ!

হাতীবান্ধা প্রতিনিধি: দূর থেকে দেখে মনে হতে পারে যেন কোনো নদী বা খালের ওপর থাকা ঝুলন্ত সেতু। কাছে গেলেই স্পষ্ট হয় সেটা সেতু নয়, ঝুলছে প্রায় ১০৪ ফুট দৈর্ঘ্যরে রেললাইন। আর এর নিচে থাকা খাল দিয়ে বয়ে যাচ্ছে বানের পানি। লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলপথের হাতীবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের কিছুটা দূরের দৃশ্য এটি। রেললাইনের ওই অংশটিতে ছিল না কোনো খাল-ব্রিজ, ছিল শক্তমাটি। চলতি বন্যায় নদী উপচে প্রচন্ড পানির চাপে অংশটি ভেঙ্গে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এই অবস্থার। গত রবিবারের এ ঘটনার পর থেকে এই পথে বন্ধ রয়েছে ট্রেন যোগাযোগ। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ। এটি সংস্কার করতে আরও বেশকিছু দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে বিভাগ।

লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় কার্যালয় সূত্র জানায়, লালমনিরহাট-বুড়িমারী ৭৮ কিলোমিটার রেলপথের ওই অংশটি মারাতœক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া বর্তমানে ট্রেন চলছে লালমনিরহাট থেকে ভোটমারী পর্যন্ত। এতে জেলার পাঁচ উপজেলার মধ্যে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলা পুরোপুরি ট্রেন সেবার বাইরে চলে গেছে। হাতীবান্ধার ঘটনাস্থলে প্রায় ১০৪ ফুট রেললাইন একেবারে ঝুলে আছে খালে উপর। আর এর নিচে তৈরি হয়েছে অন্তত ১৮ ফুট গভীর খাল।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্থ রেললাইনটি যেন পরিণত হয়েছে কোনো পর্যটন স্থানে। এই অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই সেখানে প্রতিদিনই হাজির হচ্ছেন নানা বয়সী অসংখ্য নারী পুরুষ। তাদের কেউ কেউ আবার ঝুঁকি নিয়ে সেই লাইনে উঠে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। এতে যে কোনো মুহুর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানীর মতো ঘটনা।

পাশের উপজেলা থেকে ঝুলন্ত রেললাইন দেখতে আসা আবুল কালাম বলেন, ‘টিভিতে দেখেছি বন্যায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ঝুলছে। তাই সেটা নিজের চোখে দেখতে এসেছি’। হাতীবান্ধার সীমান্ত গ্রাম জাওরানী থেকে স্বামীসহ আসা শেফালী বলেন, ‘শুনেছি এটা দেখতে অনেকে আসছে প্রতিদিন। তাই আমরাও দেখতে এসেছি। এ ধরণের দৃশ্য আমরা কখনও দেখিনি’। স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ আবুল হোসেন বলেন, ‘বিট্রিশ সরকার এই লাইন তৈরির পর কখনও এ ঘটনা ঘটেনি। অথচ এবারের বন্যার কারণেই শক্ত মাটি-পাথর ভেঙ্গে গেছে পানির চাপে’।
এ রেল লাইন ভেঙ্গে যাওয়াতে পাশের ৪টি ইউনিয়ন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে নতুন করে আর একটি শাখা নদী সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন হাতীবান্ধার স্থানীয়রা।

Comments
Loading...