Connecting You with the Truth

১৩তম আসরে ভারতকে হারিয়েই শুরু করতে চায় বাংলাদেশ

mas3স্পোর্টস ডেস্ক: আরেকটি সূর্যোদয়, এরপর টিক-টিক করে এগিয়ে চলা ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যথানিয়মে নামবে সন্ধ্যা; তারপরই মাঠে গড়াবে এশিয়ার ক্রিকেট পরাশক্তিদের ধুমধাড়াক্কা টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপের আসর। বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ১৩তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও ভারত। ম্যাচটি মাঠে গড়াবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।টুর্নামেন্টের আগেরদিন ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠানের পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশের রঙিন পোশাকের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ও ভারতীয় তারকা বিরাট কোহলি। তাতে দুই অধিনায়কের মুখেই ছিল জয় তুলে নেওয়ার প্রত্যয়।

গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হারটি নানা কারণে বিতর্কিত ছিল। কোয়ার্টার ফাইনালের সেই হারের পর বাংলাদেশে খেলতে এসে ওয়ানডে সিরিজ হেরে ফিরেছে ধোনির দল। এরপর এশিয়া কাপেই প্রথম দেখা হচ্ছে দু’দলের।

উদ্বোধনী ম্যাচেই ভারতের মত প্রতিপক্ষ। যারা কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টুয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে এসেছে স্বাগতিকদের। পরে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার সাথে সামান্য পারফরমেন্সের ওঠানামা দেখলেও দুর্দান্ত ছন্দেই আছে ভারতীয়রা। তবে শুরুতেই ভারতকে পাওয়া বাংলাদেশের জন্য ভালো হয়েছে বলেই মনে করছেন অধিনায়ক মাশরাফি। টাইগার তারকার বিশ্বাস, বিশ্বের অন্যতম সেরা দলের বিপক্ষে ভালো শুরু করতে পারলে পুরো টুর্নামেন্টেই ভালো খেলার রসদ পাবে টাইগার শিবির।

ভারতের বিপক্ষে তাই নিজেদের সেরাটা দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন মাশরাফিরা। শুরুটা ভালো হলে পুরো দল আত্মবিশ্বাস পেয়ে যাবে বলে মনে করছেন অধিনায়ক। ভারতের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও সতীর্থদের কাছে নিজেদের সেরাটা চেয়েছেন তিনি। ভারতকে হারাতে নিজেদের তিন বিভাগেই খুব ভালো করার কথা বলেছেন ম্যাশ। আপাতত তাই ফলাফল নিয়ে ভাবছেন না টাইগার অধিনায়ক।

ঘরের মাঠে গত বছর ভারতকে গুঁড়িয়ে দিতে মুস্তাফিজুর রহমানের অবদান ছিল অনেক। আবারো একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে নামার আগে দলের মূল বোলিং অস্ত্রকে নিয়ে মাশরাফি বেশ আশাবাদীও। মুস্তাফিজ সদ্যই চোট থেকে ফিরেছেন। নিজেকে মেলে ধরতে তার সমস্যা হতে পারে। তার ওপর ভারত প্রতিপক্ষ হওয়ায় ভালো করার চাপও থাকবে। কিন্তু অধিনায়কের চোখে প্রত্যাশার আকাশচুম্বী ভারে নুইয়ে যাওয়ার নন এই বাঁহাতি তরুণ পেসার। বাইরের আলোচনাকে তিনি সামান্যই পাত্তা দেন বলে জানালেন ম্যাশ।

বোলিং আক্রমণে মাশরাফির সাথে মূল দায়িত্বটা পালন করতে হবে মুস্তাফিজকেই। সাথে থাকতে পারেন তাসকিন আহমেদ। তবে স্পিনে সাকিবের সাথে হাত ঘোরানোর সুযোগ হতে পারে আরাফাত সানির। সাকিবের কাছ থেকে ব্যাটিংয়েও ভালো ভূমিকা আশা করবে বাংলাদেশ।

কিন্তু উদ্বোধনীতে তামিমের অনুপস্থিতি চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে টাইগার শিবিরের। উদ্বোধনীতে রানে না থাকা সৌম্য সরকারের ওপর তাই বাড়তি চাপ থাকবে। সঙ্গী হিসেবে হয়তো মোহাম্মদ মিথুনকেই পেতে যাচ্ছেন সৌম্য। বিশ্বকাপের দলে থাকা মিথুনকে ম্যাচ খেলার সুযোগ দিতে রানে থাকা ইমরুলকে মাঠের বাইরেই থাকতে হতে পারে।

এরপর অনুমিতভাবেই থাকছেন সাব্বির, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক। জায়গা মিলতে পারে নাসিরেরও। সেক্ষেত্রে সোহানকে গ্লাভস ছেড়ে দিতে হবে পারে মুশফিকের কাছে। সবমিলিয়ে গত বছরের উড়তে থাকা দলটাই মাঠে নামছে। এখন কেবল সেই পারফরমেন্সটা টেনে আনার পালা।

অন্যদিকে ভারতীয়রা দলে পাচ্ছে না নিয়মিত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। টুর্নামেন্ট শুরু আগেই চোটে পড়েছেন ভারতের রঙিন পোশাকের তারকা। তার জায়গায় দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে কোহলিকে। এছাড়া গত কয়েকমাস খেলা দলটিকেই নিয়ে নামছে ভারত। ব্যাটে-বলে যারা বেশ দুর্দান্ত করে চলেছেন ঘরে-বাইরে।

তবে খেলাটা যখন টাইগারদের মাটিতে, তখন খানিকটা চিন্তার বলিরেখা যে একেবারেই ভারতীয় শিবিরকে ছুঁয়ে যাচ্ছে না তা নয়। কোহলি যেমন ম্যাচের আগের দিন মুস্তাফিজকে ফ্যাক্টরই শিকার করে নিলেন। যে বদলে দিতে পারে ম্যাচের গতিপথটাই। টাইগারপ্রেমীরাও নিশ্চয় এমন কিছুর আশায়ই মিরপুরে চোখ রাখবেন। তবে সেই আশাটা কেবল মুস্তাফিজের কাছে নয়, দলের সব টাইগারই যেন ম্যাচে ফ্যাক্টর হয়ে ওঠেন এই প্রত্যাশাই থাকবে সকলের। সেটি যে আরেকটি উতসরের রাতে পূর্ণ করতে পারে লাল-সবুজের এই প্রান্তরকে।

Comments
Loading...