৬ দফা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করুন : রাষ্ট্রপতি
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ৬ দফা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছন।
তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৬ দফা আন্দোলন আমাদেরকে চলমান গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে উদ্বুদ্ধ করে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই আসুন, আমরা ৬ দফা আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে সম্মিলিতভাবে আত্মনিয়োগ করি।’
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৬৬ সালের ঐতিহাসিক ৬ দফা অন্যতম মাইলফলক একথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এই ঐতিহাসিক ৬ দফার প্রবক্তা। স্বাধীনতা সংগ্রামে অপরিসীম অবদানের জন্য তিনি আজ জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আন্দোলন আর ত্যাগের ইতিহাস। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের পর এ আন্দোলন-সংগ্রাম ক্রমান্বয়ে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও বৈষম্যনীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত সর্বদলীয় সম্মেলনে ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রস্তাব পেশ করেন।
তিনি বলেন, এই ৬ দফার মধ্যেই পূর্ববাংলার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থকে তুলে ধরা হয়। মূলতঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতার অপরিহার্যতা বিধৃত ছিল এ দাবিসমূহের মধ্যে।
আবদুল হামিদ বলেন, ৬ দফা ঘোষণার পর শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে বারবার গ্রেফতার করে এবং তাঁর উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। এ সত্ত্বেও তিনি ৬ দফার দাবি থেকে সরে আসেননি। তাঁর নেতৃত্বে দাবি আদায়ের আন্দোলন বেগবান হয় এবং তা অল্প সময়ের মধ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, এ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের ডাকে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন পূর্ব বাংলায় হরতাল চলাকালে শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে পুলিশ ও ইপিআর নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালায়। এতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, মুজিবুল হকসহ অনেকে শহীদ হন। ‘আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে আমি ৬ দফা দাবি আদায়সহ জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিহত সকল শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।’
তিনি বলেন, বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা অর্জন এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জাতির পিতার অবদান অপরিসীম। মূলত বাংলা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাঁথা। জাতির এই মহান স্থপতি দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করতে চেয়েছিলেন। তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণে তথা সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।