নীলফামারীর কাজী আব্দুর রশীদ উচ্চ বিদ্যালয়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী আলোচনা সভা
নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারী সদর উপজেলার কাজীরহাট বাজার সংলগ্ন কাজী আব্দুর রশীদ উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে হেযবুত তওহীদের সৈয়দপুর উপজেলা সভাপতি তানভির আলম রাশেলের সঞ্চালনায় ও প্রধান শিক্ষক কাজী দৌলত হোসেন এর সভাপতিত্বে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ শীর্ষক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, ছাত্র- ছাত্রীদেরকে নিয়ে আলোচনা সভা ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত আলোচনায় মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখে হেযবুত তওহীদের নীলফামারী জেলা সভাপতি মো. ইসরাইর আলিম।
তিনি বলেন বর্তমানে সারা বিশ্বে জঙ্গিবাদীদের হাতে যে পরিমাণ মানুষ নিহত হচ্ছে বা ধ্বংসযজ্ঞ হচ্ছে তার চেয়ে বহু বহুগুণ বেশি মানুষ হতাহত হচ্ছে জঙ্গিবাদীদের দমন করতে গিয়ে। একের পর এক দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, ক্ষয়ক্ষতির কোনো সীমা-পরিসীমা থাকছে না। প্রশ্ন হচ্ছে এত কিছু করেও দিন দিন জঙ্গিবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে কেন?
প্রথম কারণ- জঙ্গিবাদ আদর্শিক বিষয়। যারা জঙ্গি হচ্ছে তারা একটি ভ্রান্ত আদর্শকে সঠিক মনে করে সেটা প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এর সঙ্গে তাদের ধর্মীয় আবেগ ও ঈমান জড়িত। তারা যা করছে পার্থিব লাভের আশায় করছে না, পরকালীন প্রতিদানের আশায় করছে। এজন্য শুধু শক্তি প্রয়োগ করলে একে ঈমানী পরীক্ষা মনে করায় তাদের ঈমান আরো বলিষ্ঠ হচ্ছে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সেই চেতনা প্রবাহিত হচ্ছে।
এই ধর্মীয় চেতনাকে অবজ্ঞা করে এতদিন অনেকেই জঙ্গিবাদের উৎপত্তির কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন অশিক্ষা, বেকারত্ব, দারিদ্র্য ইত্যাদির কারণে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে তারা জঙ্গিবাদের দিকে পা বাড়াচ্ছে। কিন্তু গুলশান আর শোলাকিয়ার হামলার ঘটনায় ইংলিশ মিডিয়াম ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া প্রভাবশালী বিত্তবান ঘরের সন্তানেরা অংশ নেওয়ায় এখন অনেকেই বুঝতে পারছেন জঙ্গিরা কোনো পার্থিব স্বার্থের জন্য ওপথে যায় না। প্রকৃতপক্ষে জঙ্গিবাদের সাথে মানুষের ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট জড়িত এবং এই সেন্টিমেন্ট এতটাই শক্তিশালী যে জেল-ফাঁসির ভয় করা তো দূরের কথা, জঙ্গিরা এই পথে মৃত্যুবরণ করতে পারাকেই বিরাট সৌভাগ্য মনে করে।
দ্বিতীয় কারণ- জঙ্গিবাদের স্রষ্টা প্রকৃতপক্ষে সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো যে কথা পূর্বেই বলে এসেছি। তারা জঙ্গিবাদের ইস্যুকে জিঁইয়ে রেখে বিশ্বময় নিজেদের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এজন্য মানবতার যতই বিপর্যয় ঘটুক না কেন, সেটা এই দানবিক পরাশক্তিগুলোর জন্য কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। তাদের চাই তেল, গ্যাস, আধিপত্য, অস্ত্রব্যবসার জমজমাট বাজার এবং শক্তিশালী প্রভাব বলয় (Predominance)। এই পরাশক্তিগুলোকে অনুসরণ করে যদি শুধুমাত্র বল প্রয়োগে জঙ্গিবাদ দমনের বা নির্মূলের চেষ্টা চালানো হয়, সেটা কাঙ্ক্ষিত ফল বয়ে আনবে না। অতএব এই ধর্মবিশ্বাসী মানুষের সামনে ইসলামের প্রকৃত আকিদা প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরা অনিবার্য হয়ে দাড়িয়েছে।
আমরা হেযবুত তওহীদ আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে হাটে বাজারে শহরে গ্রামে মানুষের সামনে তুলে ধরছি আমরা আশা করছি আপনারও আমাদের এই কাজ কে আরো গতিশীল করার জন্য দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য এগিয়ে আসবেন। উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজী দৌলত হোসেন বলেন আমাদের বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে হেযবুত তওহীদ কে সাধুবাদ জানাই দেশের এই সংকটকালে এমন মহতী উদ্দেগ কে এবং জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এমন কার্যকরি পদক্ষেপে সকল কে এগিয়ে আসা দরকার। উক্ত আলোচনা সভায় জঙ্গিবাদের উপর এক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।