Connecting You with the Truth

৬৩ বছরে পিএসসি পরীক্ষায় বসলেন বাছিরন

meherpur_basiron_pic-01
মেহেরপুর গাংনীর উপজেলার হোগলবাড়ি মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৩ বছর বয়সে প্রাথমিক সমপনী পরীক্ষায় অংশ নিলেন বাছিরন নেছা নামের এক বৃদ্ধা। তিনি উপজেলার হোগলবাড়িয়া গ্রামের মৃত রহিল উদ্দীনের স্ত্রী এবং একই উপজেলার ‘হোগলবাড়িয়া পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।

অদম্য এই শিক্ষার্থী বাছিরন নেছার দুই মেয়ে ও এক ছেলে। এছাড়াও রয়েছে জামায়, ছেলের বৌ ও পাঁচটি নাতি-নাতনি। ছেলে মহিরউদ্দীনের সহায়তায় তিনি লেখাপড়া করছেন। তার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন স্কুল ড্রেসে মাধ্যমিক পাস করে কলেজে লেখাপড়া করার।

বাছিরন জানায়, বিভিন্ন কারণে সঠিক বয়সে পড়ালেখা শিখতে পারিনি। নিজের ছেলে-মেয়েকেও পড়ালেখা শেখাতে পারিনি। তাই মনের মধ্যে জেদ ছিল। আমার নাতি-নাতনির সাথে লেখাপড়া শিখব। মনের সেই যন্ত্রণা থেকেই প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম। বাছিরন বলেন, আমার এখন একটাই স্বপ্ন হাইস্কুলে লেখাপড়া করব। বেঁচে থাকলে কলেজেও পড়ার ইচ্ছা আছে তার।

তিনি আরও জানান, পুত্রবধূ জাহানারা খাতুন তার লেখাপড়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করে থাকেন। এছাড়া একমাত্র ছেলে মহিরউদ্দীন ও অনার্স পড়ুয়া নাতি জসিম তাকে পড়ালেখার ব্যাপারে উৎসাহ ও সহযোগিতা করে থাকে।

বাছিরনের পুত্রবধূ জাহানারা খাতুন জানান, ক্লাসের সহপাঠীরা তাকে নাম ধরেই ডাকে। এতে তিনি উল্লাসিত হয় এবং তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে খেলাধুলায় মেতে ওঠেন। আর সবার মতো স্কুল ছুটি শেষে হৈ-হুল্লা করতে করতে ক্লাস থেকে তিনিও বের হয়ে যান। এভাবেই শাশুড়ি তার হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো খুঁজে পেতে চান।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল উদ্দীন আহমেদ জানান, বাছিরন নেছার লেখাপড়া নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরাও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। পাড়া-প্রতিবেশীরাও তাকে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। প্রধান শিক্ষকের বিশ্বাস ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় তিনি ভালো ফলাফল অর্জন করবেন। এখন পর্যন্ত বছিরনই বাংলাদেশের সর্ব বয়ষ্ক প্রাথমিক সমপনী পরিক্ষায় অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থী বলেও মনে করেন তিনি।

Comments