এলিয়েন গ্রহে বসবাসের জন্য যেটি সবচাইতে বেশি প্রয়োজন
রকমারি ডেস্ক:
পৃথিবীর বাইরে এমনকি সৌরজগতের বাইরে বসবাসের জন্য খোঁজ করে চলেছে মানুষ। কিন্তু নিজের তারকার খুব কাছে অবস্থিত গ্রহগুলো হবে যেমন প্রচণ্ড গরম, তেমনি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। এসব গ্রহকে বসবাসের উপযোগী হতে হলে প্রয়োজন একটি বায়ুমন্ডল। নিজের তারকাকে খুব কাছে থেকে প্রদক্ষিণ করতে থাকা গ্রহগুলোর সমস্যা হলো, এদের একটি দিক সবসময় আলোয় থাকবে, অন্য দিকটি সবসময় থাকবে আঁধারে। যার ফলে একই গ্রহে বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যাবে প্রচণ্ড গরম ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। আলোকিত দিকে ফুটন্ত তাপমাত্রা থাকতে পারে, আর অন্ধকার দিকটি হবে জমাট বাঁধা ঠাণ্ডা। এই একই ঘটনা দেখা যায় পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে থাকা চাঁদের ক্ষেত্রে। এর একটি দিক সবসময় পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে, অপর দিকটি থাকে আমাদের দৃষ্টির অগোচরে। এমন পরিস্থিতি যেসব গ্রহে থাকবে, তাদের মাঝে জীবনের সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়া হবে শক্ত। একে বলে সিনক্রোনাস রোটেশন। কিন্তু এমন পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হবে যদি সেই গ্রহে থাকে পৃথিবীর মতো একটি বায়ুমন্ডল। এক্ষেত্রে জোয়ার-ভাঁটার অপরিসীম গুরুত্ব আছে। পৃথিবীর ওপর চাঁদের টান তৈরি করে জোয়ার-ভাঁটা। এর পাশাপাশি পৃথিবী চাঁদের ওপর টান তৈরি করে। এ টানের কারণেই চাঁদের প্রদক্ষিণ গতি ধীর হতে হতে এমনভাবে পৃথিবীর সাথে মিলে যায় যাতে এর একটি দিক সবসময়ে পৃথিবীর দিকে মুখ করে থাকে। এই টান দূরত্বের ওপর নির্ভরশীল। দূরত্ব কম হলে টানও বেশী হয়। এ কারণে নিজের তারকার কাছে থাকা গ্রহে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। পৃথিবী সূর্য থেকে অনেক দূরে হবার কারণে এ অবস্থা দেখা যায় না। শুক্র গ্রহ সূর্যের কাছাকাছি। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী তারও একটি দিক সবসময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকার কথা। কিন্তু তা হয়না। গবেষকেরা ধারণা করেন, এর জন্য শুক্রের ভারি বায়ুমন্ডল দায়ী। বিভিন্ন গ্রহের বায়ুমন্ডল আসলে সেই গ্রহের মতো গোলাকার হয় না। এরা আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে, নড়াচড়া করে এমনকি ফুলে ওঠে কিছু কিছু জায়গায়। নড়াচড়ার সাথে সাথে এরা সেই গ্রহের ওপরে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। শুক্রের বায়ুমন্ডল এতোটাই ভারি যে তা এই সিনক্রোনাস রোটেশন রোধ করতে পারে। বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রার ব্যাপারটাও এক্ষেত্রে বিবেচ্য। তাপমাত্রা বায়ুমণ্ডলকে এমনভাবে প্রভাবিত করতে পারে যাতে সিনক্রোনাস রোটেশন না হয়। এই ব্যাপারটি এক্সোপ্ল্যানেট অর্থাৎ সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলোতেও একই ব্যাপার দেখা যেতে পারে বলে আশা করছেন গবেষকেরা।