দেদারসে কাটা হয়েছে সরকারি গাছ। ঘটনার দেড় মাস অতিবাহিত হলেও নেয়া হয়নি কোন আইনি ব্যবস্থা! শাস্তি এড়াতে আলামত নষ্ট!
রেলের পূর্বাঞ্চলের পলোগ্রাউন্ডে অবস্থিত টিএ ব্রাঞ্চ ব্রাঞ্চের আঙ্গিনা থেকে রেলের ভুয়া প্যাডে ভুয়া স্বাক্ষরিত আদেশে দামী গাছ পাচার হওয়া বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোন আইনের ব্যবস্থা। তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। বিশ্বস্ত গোপন সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় শাস্তি এড়াতেই মামলার আলামত কাটা গাছের গুড়িগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে দিন দুপুরে।
রেলের গাছ কেটে বাসার জন্য আসবাবপত্র তৈরী করতেই কাটা হয় রেলের আঙ্গিনায় অবস্থিত গাছগুলি। টি এ ব্রাঞ্চের টিএওএন্ডও মো: আবুল হাসান আখন্দ ও সি আর বি চৌকির সি আই মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উঠলেও এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। এব্যাপারে গত এপ্রিল মাসের ২ তারিখ চীপ কমান্ড্যান্ট জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আগে থেকেই সি আই মাসুদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। ঈদের পরেই সি আই মাসুদ সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একই সূত্রে গতকাল বুধবার পুনরায় জহিরুল ইসলামের কাছে গেলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা না বলে এড়িয়ে গিয়ে উনার অধিনস্ত কমান্ড্যান্ট রেজওয়ানুর রহমানের কাছে যেতে বলেন। কমান্ড্যাট রেজওয়ানুর রহমান গাছ কাটার বিষয়টি জানেন বলে জানান সাংবাদিকদের। তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে বলে জানলেও গাছ কাটার বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ হয়েছে কিনা তিনি তা জানেন না বলে জানান এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে বলে জানান। পরে এ বিষয়ে রেল পূর্বের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জি এম নাজমুল ইসলামের মন্তব্য নিতে গেলে তিনিও সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, গাছ কাটা হয়েছে এটা তিনি জানেন। তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা এখন পর্যন্ত তিনিও কিছু জানেন না। পরে তিনি এফএএন্ডসিএও/প্রধান হিসাব কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
সারা দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ যখন পরিবেশ রক্ষায় লাখ লাখ গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিচ্ছে, সেখানে রেলের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা গাছ নিধনে ব্যস্ত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ থাকার পরেও নেওয়া হচ্ছে না যথাযথ কোন আইনি পদক্ষেপ। এর ফলে স্পষ্ট প্রমাণ হয় যে বাংলাদেশের রেলওয়েতে যে কেউ যেকোনো ধরনের অপরাধ করে সহজেই পার পেয়ে যায়। এভাবেই তদারকি ও বিচারহীনতায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রেলের বিভিন্ন খাত থেকে বিলীন হচ্ছে সরকারি সম্পত্তি। সেই সাথে প্রতিবছর লোকসান গুনতে হচ্ছে শতকোটি টাকা।
সি আই মাসুদুর রহমানের নামে গাছ কাটার অভিযোগ ছাড়াও সিআরবি শিরীষ তলায় ভাসমান দোকান বসিয়ে নিয়মিত চাঁদা আদায় করার অভিযোগ আছে দীর্ঘদিন থেকে। যা রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে চলতি মে মাসের ৫ তারিখ থেকে উচ্ছেদ করা হয়। সব মিলিয়ে সি আই মাসুদুর রহমানের পক্ষে এত সুন্দর অভিযোগ থাকার পরেও কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে তাকে এখনো বহাল তবিয়তে রাখা হয়েছে এই প্রশ্ন এখন জনমনে।