হরতাল-অবরোধে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি-সংসদে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশেরপত্র ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোধে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ তথ্য জানান। কেবল ব্যক্তিগত স্বার্থেই বিএনপি নেত্রী এ হরতাল দিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত প্রশ্ন জিজ্ঞাসাকালে যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৫ জানুয়ারি থেকে টানা ৫২ দিন ধরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট হরতাল-অবরোধের নামে নৈরাজ্য করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। পেটের তাগিদে কাজে বের হয়ে এ পর্যন্ত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই আগুনে পুড়ে মারা যায়।
তিনি বলেন, পেট্রলবোমাসহ নানা ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সহস্রাধিক মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। ১১৭৩টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। ছয়টি লঞ্চে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, ২৫ দফায় ট্রেনে নাশকতা করা হয়েছে। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবসা-বাণিজ্য, রপ্তানি ও অন্যান্যভাবে এক লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা জানে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর গঠিত সরকারের মেয়াদ পাঁচ বছর। তারপরও কেন এই নাশকতা।
বিএনপি-জামায়াতকে পরস্পরের দোসর অভিহিত করে সংসদ নেতা বলেন, তাদের নাশকতার একটাই উদ্দেশ্য- যুদ্ধাপরাধীদের এবং খালেদা জিয়াকে তাদের অপরাধের মামলা থেকে রক্ষা করা।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, দুজনের আমৃত্যু কারাবাস, একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আন্তর্জতিক রীতিনীতি সম্পূর্ণ অনুসরণ করে এ বিচার সম্পন্ন হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে একজনের রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাকিদের রায় আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কার্যকর হবে। এ ছাড়া, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার পুত্রের (তারেক রহমান) দুর্নীতির নয়টি মামলা আদালতে বিচারাধীন। এসব মামলা থেকে নিজেকে ও পুত্রকে বাঁচাতেই তার আন্দোলন। তার আন্দোলনে কোনো জনসম্পৃক্ততা নেই।
জনসম্পৃক্ততা ছাড়া এ কার্যক্রমে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে জামায়াত-শিবিরের কর্মী, বিএনপির বিপথগামী কিছু লোক এবং সন্ত্রাসীদের দিয়ে এ নাশকতা চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, গোষ্ঠী, অর্থায়নকারী বা পরিকল্পনাকারীদের কর্মকাণ্ড-সংক্রান্ত তথ্যাদি সংগ্রহের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ গ্রেপ্তার করছে। তাদের এ ধরনের কার্যক্রম মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার উপযোগী।