ভারতে এবার সাত বছরের বাচ্চা মেয়েকে জীবিত মাটিতে চাপা
উত্তর প্রদেশ রাজ্যের পুলিশ বলছে, মেয়েটির ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাই তাকে প্রথমে শ্বাসরুদ্ধ করে; তারপর তাকে মাটিচাপা দিয়েছিল বলে তারা সন্দেহ করছে। তবে এভাবে মেয়েটিকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল কেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। পুলিশ এখন অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
তনু নামের সাত বছরের ওই মেয়েকে তারই এক চাচা-চাচি নির্জন একটি ক্ষেতের ধারে নিয়ে দমবন্ধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। মেয়েটি মারা গেছে ভেবে তারা তার দেহটি গর্ত খুঁড়ে মাটির নিচে চাপাও দিয়ে দেয়।
কিন্তু ঘণ্টা কয়েক পরেই মেয়েটি জ্ঞান ফিরে পায়। অনেক চেষ্টা করে সে মাটির নিচ থেকে তার মাথাটি বের করে সাহায্যের জন্য কাঁদতে থাকে। তার আর্তচিৎকার শুনে আশপাশের এলাকা থেকে চাষিরা ছুটে গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশের কাছে তনু তার এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেয়।
তনু পুলিশকে বলেছে, “আমাকে আখ খাওয়াবে বলে আঙ্কল আর আন্টি সঙ্গে নিয়ে গেল। কিন্তু পরে মাটি খুঁড়ে গর্ত বানাল, তারপর সেই গর্তে আমাকে ফেলে দিল। আমার ওপর মাটিও চাপা দিল। পরে যখন আমার জ্ঞান ফিরল, আমি খুব কাঁদছিলাম। তখন ওরা সবাই এসে আমাকে বাঁচাল।”
ঘটনার পর থেকেই পুলিশ মেয়েটির সেই আঙ্কল ও আন্টির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
জানা গেছে, জন্মের পর থেকে মায়ের সঙ্গে তনু ওই আত্মীয়দের সঙ্গেই থাকত। মেয়েটির বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে অনেক দিন, এবং এরপর থেকে তার মায়েরও কোনো হদিশ মিলছে না।
সীতাপুর জেলার পুলিশ সুপার রাজেশ কৃষ্ণা বলেন, “মেয়েটি শারীরিকভাবে এখন সম্পূর্ণ ঠিক আছে। ওর মামা আর নানি আমাদের কাছে এসেছিলেন। তাদের হাতেই আমরা ওকে তুলে দিয়েছি। তার আগে হাসপাতালে ওর সব রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর শুশ্রূষা করেই কর্তৃপক্ষ স্থির করেন, ওকে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে।”
ভারতে কন্যাসন্তানকে মেরে ফেলার ঘটনা যদিও বিরল নয়, তার পরেও সাত বছরের একটি মেয়েকে শ্বাসরুদ্ধ করে কবর দেয়া হচ্ছে, এমন ঘটনা প্রায় শোনা যায় না বললেই চলে। যে মেয়েটি সাত বছর ধরে ওই আত্মীয়দের সঙ্গে আছে, তারা কেন তাকে মারতে চাইবে, এর পেছনে ধর্মীয় কারণে শিশুবলি দেয়া, সম্পত্তি বা পারিবারিক অন্য কোনো কারণ আছে কি না, সেটাও এখনো স্পষ্ট নয়।
পুলিশ সুপার রাজেশ কৃষ্ণাও স্বীকার করছেন, শিশুটিকে মাটিচাপা দেয়ার কারণ কী, সে বিষয়ে তারাও এখনো অন্ধকারে। তিনি বলেন, অভিযুক্ত দুজন আত্মীয় ও তাদের একজন সঙ্গীর খোঁজে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তাদের গ্রেফতার করা গেলে তার পরেই বোঝা যাবে এর পেছনে কী মোটিভ ছিল।