মস্তিষ্ক ছাড়াই এক যুগ
২০০১ সালে ক্রিসমাসের সন্ধায় জন্ম নিয়েছিল বিরল এক শিশু। মাথার ভেতর সাধারণ মানুষের মতো যেমন মস্তিষ্ক গঠন হওয়া উচিত, তেমন ছিল না।
ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন, শিশুটির ব্রেন বলে কিছুই নেই। তাকে তিন মাসের বেশি বাঁচানো যাবে না। তবে ডাক্তার আমাদের কাছে সৃষ্টিকর্তার দূত হলেও তাদের সব ভবিষ্যতবাণীকে অদূরে রেখে ১২ বছর পৃথিবীর রূপ, রস, গন্ধ আস্বাদন করে ২ সেপ্টেম্বর আমাদের ছেড়ে চলে যান হাইড্রোনেনসেফেলি রোগে আক্রান্ত ট্রেভর জজ ওয়ালট্রিপ।
হাইড্রোনেনসেফেলির মতো বিরল রোগে আক্রান্ত মানুষ একশোয় একজন বাঁচে। হয়তও তাও নয়। ডাক্তাররা ট্রেভরকে যেখানে তিন মাস সময় দিয়েছিল, তিনি প্রায় এক যুগ পৃথিবীর বুকে কাটিয়ে চিকিৎসাশাস্ত্রে নজির সৃষ্টি করলেন।
তিনি চোখে দেখতে পেতেন না। সবকিছু স্পর্শ করে বুঝে নিতেন সম্পর্কের উষ্ণতা, ভালোবাসা। তবে আমাদের মতো সবকিছুর অনুভুতি তার ছিল না। কারণ ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেছেন, তার ব্রেন বলে কিছু নেই।
ব্রেনের ভিতর দুই গোলার্ধর বদলে ছিল সেরিব্রোস্পাইনাল তরল থলি। ট্রেভর জন্মেছিল একটি ব্রেন স্টেম নিয়ে যেখানে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারত, কিছু অনুভুতি বুঝতে পারত, আর হৃদস্পন্দন হত। এত কষ্টের মধ্যেও তিনি প্রায় একযুগ বেঁচে থাকলেন, তা সত্যি বিস্ময়।
অন্যদিকে, আরো একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গিয়েছে। মস্তিষ্ক ছাড়াই দিব্যি বেঁচে বর্তেই রয়েছেন ৮৮ বছরের এক ব্যক্তি। অদ্ভূত শোনালেও এ কথা সত্যি। ৮৮ বছরের ওই বৃদ্ধের মস্তিষ্কের দুটি অংশের সংযোজক স্নায়ুই নেই। সাধারনণভাবে, প্রত্যেক মানুষের মস্তিষ্ক দুটি ভাগে বিভক্ত। স্নায়ুজালে জোড়া থাকে এই দুটি অংশ, একে বলে মহাসংযোজিকা (কর্পাস কলোসাম)। কিন্তু একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, এইচ ডব্লু নামের এই ৮৮ বছরের বৃদ্ধের কর্পাল কলোসাম নেই। জন্ম থেকেই তার এই গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটি নেই।
কিন্তু এসব স্বত্বেও এইচ ডব্লুর কোনও অসুবিধা হয়নি। সেনাবাহিনীতে স্বাভাবিকভাবেই চাকরি করেছেন। অবসরের পরেও অন্য কাজ করতে তার কোনও সমস্যা হয়নি। চিকিৎসকদের কাছে যা যথেষ্ট বিষ্ময়কর। সম্প্রতি স্মৃতি সংক্রান্ত মামুলি সমস্যা নিয়ে তিনি চিকিৎসকের কাছে যান। আর তখনই তার গুরুত্বপূর্ণ স্নায়ু না থাকার বিষয়টি ধরা পড়ে।