সংবিধান সংশোধন দূরভিসন্ধিমূলক: মওদুদ
স্টাফ রিপোর্টার:
সংসদের হাতে বিচারপতিদের অভিসংশন ক্ষমতা দিতে সংবিধান সংশোধন সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য এবং দূরভিসন্ধিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সংসদের হাতে বিচারপতির অভিসংশন ক্ষমতা দিতে সংসদে বিল উত্থাপনের প্রতিবাদে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের দক্ষিণ হলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত এক সমাবেশে মওদুদ এ মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত দেশের সব বারে আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে প্রতিদিন বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ।
মওদুদ আহমদ বলেন, “সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান বিচারপতিদের অভিসংশনের ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে রাষ্ট্রপতির নিকট দিয়েছিলেন এবং বেশিরভাগ পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ এ বিষয়টি স্বীকার করতে ও বলতে লজ্জা পায়।” তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠন করেছিলেন। সংবিধান সংশোধন দলীয় ব্যাপার নয়, এটা জাতীয় ইস্যু।” তিনি আরও বলেন, “মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল সুপ্রিম কোর্ট। আর সংসদের হাতে অভিসংশন ক্ষমতা দেয়া হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও ক্ষুণœ হবে।” সাবেক প্রধান বিচারপতি, বর্তমানে আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক দেশের অনেক ক্ষতি করেছেন। তিনি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করে সব সামরিক আইন বাতিল ঘোষণা করার রায় দিয়েছিলেন, কিন্তু জিয়াউর রহমানের করা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল, সর্বদলীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে অবৈধ ঘোষণা করেননি। অথচ সেই বিচারপতি এখন বলছেন সংসদের হাতে বিচারপতিদের অভিসংশন ক্ষমতা ফিরিয়ে দিলে ভালো হয়, এটা খুবই অনৈতিক। এমন বক্তব্যে প্রমাণ করে তিনি আগেও সরকারকে খুশি করার জন্য পঞ্চম সংশোধনী বাতিল করার রায় দিয়েছিলেন, এখনো সরকারকে খুশি করার জন্য সংসদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন।” প্রতিবাদ সমাবেশে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “এ আইনের ফলে বিচারপতিরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবেন না।” সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় সব দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সম্মিলিতভাবে আন্দোলনের আহ্বান জানান। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।