Connecting You with the Truth

রংপুর অঞ্চলের আলু চাষে বাম্পার ফলন

পপপপ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর: রংপুর জেলাসহ বৃহত্তর রংপুরের চার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আলু চাষ হয়েছে।এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় বড় ধরণের কোনরোগ বালাই না থাকায় উৎপাদন এবং বর্তমান বাজারে আলুর দাম ভালো থাকায় চলতি আলু চাষিরা আশার আলো দেখছে।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলে ২০১৫-১৬ সালে আলু চাষে জমির পরিমান নির্ধারন করা হয়েছে ৯১ হাজার ৯২১ হেক্টর জমি।যা এখন পযর্ন্ত আলু অর্জিত হয়েছে ৯৪হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে।ফলে এবছর আলুর আবাদ টার্গেটের চেয়ে বেশী হয়েছে। তাই আলু চাষে আশার আলো দেখছে এ অঞ্চলের আলু চাষিরা।তারা বলছে এ বছর আবহাওয়া ও আলুর দাম ভালো থাকায় বিগত বছরের লোকসান পুষিয়ে তোলা সম্ভব । উত্তর অঞ্চলে বিভিন্ন জাতের আলু আবাদ করা হয় এর মধ্যে কার্ডিনাল, গ্রান্যুলার,লেডি রোসেটা,ক্যারেজ, ডায়মন্ড,শীল আলু, পাকড়ি আলু, লাল সাদা, ধরেয়া এবং ঝাউ আলু।বর্তমান বাজারে কার্ডিনাল আলু প্রতি বস্তা ৮৪ কেজি বিক্রয় করা হচ্ছে ৮৪০ টাকা, দেশীয় কুপড়ি আল প্রতি বস্তা ৮৪ কেজি বিক্রয় করা হচ্ছে ১ হাজার ৩ শত টাকায়,গ্রান্যুলার আলু প্রতি বস্তা ৮৪ কেজি বিক্রয় করা হচ্ছে ৬৩০ টাকায় ও ডায়মন্ড আলু প্রতি বস্তা ৮৪ কেজি ৮৯৫ টাকা।
এদিকে ২০১৪-১৫ সালে উত্তর অঞ্চলে আলু চাষে জমির পরিমান নির্ধারন করা হয়েছিল ৮৮ হাজার ৮৩৬ হেক্টর জমি।এর মধ্যে আলু অর্জিত হয়েছে ৯১ হাজার ৯২১ হেক্টর জমিতে। রংপুর জেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্র ছিলো ৪৮ হাজার ৫৬৮ হেক্টর জমিতে।এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৪৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে।গাইবান্ধা জেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছিল ৯হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৯হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে।কুড়িগ্রাম জেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছিল ৫ হাজার ২৭৩ হেক্টর জমিতে এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমিতে। লালমনিরহাট জেলায় আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪হাজার ৭৯৩ হেক্টর জমিতে।এর মেেধ্য অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে।নীলফামারী জেলায় আলুু চাষে লক্ষ্যমাত্র নির্ধারন করা হয়েছিল ২০ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আলু অর্জিত হয়েছে ২২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমি।
রংপুরের সদ্যপুষ্কুরনী ইউনিয়নের ধাপেরহাট রামজীবন, গ্রামের আলু চাষী মনজুরুল ইসলাম জানান, চলতি বছর আলুর আবাদ ভালো হয়েছে। ১০ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। কিছু আলু বিক্রি করে দিয়েছি। বাকী যেটুকু আছে তা ৩০/৩৫দিন পর উত্তোলন করবো। এদিকে রংপুরে আলুর এলাকা হিসাবে পরিচিত তালূক তামপাট দোলাপাড়া,ছাওলা,কল্যাণী,অন্নদানাগরে চাষী মোহাম্মদ আলী,রুহুল আমিন,আবু বক্কর,আমিনুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম,শাহানাজ পারভিন জানান,আমাদের ৩৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত আলুতে বড় ধরণের কোন রোগবালাই না থাকায় আশাবাদি যে আলু ফলন ভালো হবে। এছাড়াও বর্তমান বাজারে আলু দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে বিগত বছরের লোকসান পুষিয়ে তোলা সম্ভব। আর যদি দাম না থাকে তাহলে আমাকে পথে বসতে হবে। রংপুরের পীরগাছা উপজেলা পারুল ইউনিয়নের দেউতি হাউদারপাড়, গ্রামের সাহেব আলী ও পশ্চিম পারুল ঘাঘটনদীর তীরবর্তি আর্দশপাড়া গ্রামের আলু চাষী ফুল মিয়া জানান, চলতি বছরে আলুতে কোন রোগবালাই নেই। তাই আমি আশা করি আলু বিক্রি করে পূর্বের ধারদেনা পরিশোধ করতে পারবো। রংপুর অতিরিক্ত উপ পরিচালক(উদ্ভিদ সংরক্ষন) অফিসার মোঃ আফতাব হোসেন বলেন । সাধারণত আলুর জীবন কাল থেকে শুরু করে ৯০ দিনে আলুর চাষ আবাদ করে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে ।
রংপুর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ শ.ম.আশরাফ আলী বলেন । গত বছরের চেয়ে চলতি বছর রংপুরসহ উত্তরঅঞ্চলে আলুর ভালো ফলন হয়েছে। এ বছর আলু আবাদ ১৫% বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । এতে করে দেশের আলুর চাহিদা অনেকটা পুরন হবে। বাজারের আলুর মূল্য সঠিকভাবে স্থিতিশীল থাকলে চলতি বছর আলু চাষিরা আলু চাষ করে কম সময়ে আর্থিক ভাবে বেশি লাভবান হবে ।

Comments
Loading...