গাইবান্ধায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কারনে প্রতি বছর নষ্ট হচ্ছে কয়েক হাজার একর জমির ফসল
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর গ্রামে ৩ বছর আগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে। এরপর থেকেই প্রতিবছর পানি ঢুকে হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হলেও পূন: নির্মানের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা)প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একেবারে নাজুক অবস্থা। বেশ কয়েক জায়গায় বাঁধ নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে। ৩ বছর আগে বাঁধ নির্মান শেষ না হতেই বন্যার পানির তোড়ে ভেঙ্গে পানি ভিতরে ঢুকে হাজার হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হলেও পূনঃ নির্মাণের উদ্যোগ নেই।
জানা গেছে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় দীর্ঘ ৩৫ কিঃমিঃ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। শুধু তাই নয়, উত্তরে রংপুর জেলার সীমান্ত থেকে দক্ষিনে বগুড়া জেলার সীমান্ত পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলাধীন ২৬০ কিঃমিঃ বাঁধের পুরোটাই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে ২২০ কিঃমিঃ বাঁধের অবস্থা বেশি নাজুক। বাঁধ দেখলেই মনে হয়, এ যেন উদ্বাস্তুদের বসবাসের জায়গা। সরে জমিনে দেখা গেছে, নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে কয়েক হাজার পরিবার বাঁধ কেটে খুপড়ির মত ছোট ছোট ঘর তুলে বসবাস করছেন। মেরামত না করায় কোথাও কোথাও সমতলে পরিনত হওয়ার মত অবস্থা হয়েছে। সুন্দরগঞ্জের তারপুর, বেলকা, ছয়ঘরিয়া, চন্ডিপুর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া, উড়িয়া, উদাখালি, কঞ্চিপাড়া, সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি, সাঘাটা ইউনিয়ন, হলদিয়া, ঘুড়িদহ, সদর উপজেলার কামারজানি, গিদারী, মোলার চর, প্রভৃতি এলাকায় বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। মোট কথা জেলার ৮১ ইউনিয়নের মধ্যে ২২টি ইউনিয়নেই বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মুখে। এছাড়া হুমকির মধ্যে রয়েছে কয়েক হাজার পরিবারের বসত বাড়ি, আবাদি জমি ও ৪০/৫০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মন্দির। এক সময় বাঁধ চলাচলের জন্য উপযুক্ত থাকলেও বৃষ্টির পানিতে ক্ষয়ে ও খানা খন্দে ভরে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। বন্যার তোড়ে ভেঁসে যাওয়া পাড়াসাদুয়া গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ীবাধ। ছবিটি বৃহস্পতিবার নদীভাঙন এলাকা থেকে তোলা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬২ সলে তিস্তা ও ব্রক্ষপূত্র নদের ডান তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর পর ৪/৫ দফায় বাঁধ সংস্কার করা হলেও সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে কাজ হয় নামে মাত্র। বাঁধ নির্মাণ না করায় পলাশবাড়ি উপজেলার কিশোরগাড়ি, হোসেনপুর, গোবিন্দগঞ্জের মহিমাগঞ্জ, রাখালবুরুজ, গোমানিগঞ্জ, নাকাই এলাকায় করতোয়া নদী সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা, সাদুল্যাপুরের দামোদরপুর, রসুলপুর ও জামালপুর এলাকায় ঘাঘট নদীর পানি ঢুকে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে প্রতি বছর। গত ৩ বছর আগে সুন্দরগঞ্জের তারাপুর গ্রামে বাঁধ পুণ:নির্মাণ কাজ চলমান অবস্থায় বন্যা ও বৃষ্টির পানির তোড়ে বাঁধ ভেসে গিয়ে প্রতি বছর ভিতর এলাকায় পানি ঢুকে পড়ছে। যার ফলে বন্যার পানি নিজামখা, তারাপুর ও চাচিয়া গ্রামে ঢুকে প্রতি বছর কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলি জানান, আমরা জরিপ চালাচ্ছি এবং সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ৫টি পয়েন্টে নদী ভাঙ্গন ঠেকানোর জন্যে জিও ব্যাগ ফেলানো হচ্ছে।