চট্টগ্রাম ব্যুরো: কক্সবাজার সংলগ্ন গভীর বঙ্গোপসাগর ও কক্সবাজার শহরে পৃথক অভিযান চালিয়ে ৭ লাখ ৩০ হাজার ইয়াবাসহ ৭ জনকে আটক করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এসময় একটি মাছ ধরার ট্রলারও জব্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার চট্টগ্রামের র্যাব-৭ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার সংলগ্ন গভীর সমুদ্র থেকে ৬ জনকে আটক করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ কলাতলী এলাকায় অবস্থিত একটি ভবন থেকে ইয়াবার মূল মালিক মোঃ রশিদকে (২৮) আটক করা হয়। তিনি ওই এলাকার ফজলুল হকের ছেলে। আটক সকলে র্যাবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, ইয়াবাগুলো মিয়ানমার থেকে ট্রলারযোগে কক্সবাজারের নিয়ে আসা হচ্ছিল। উদ্ধারকৃত ইয়াবার মূল্য প্রায় ২৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
র্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের উপ-পরিচালক এসএম সাউদ হোসেন জানিয়েছেন, র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারে কতিপয় সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী চক্র দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার বড় চালান মাছ ধরার ট্রলার যোগে কক্সাবাজার এবং চট্টগ্রাম নিয়ে আসে। তাদেরকে নীবিড় পর্যবেক্ষণের ফলশ্রুতিতে জানা যায় যে, ‘এফভি মায়ের দোয়া’ নামক একটি মাছ ধরার ট্রলার যোগে বিপুল পরিমান ইয়াবার চালান মায়ানমার হতে কক্সবাজারের দিকে আসছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে অদ্য রাতে র্যাব-৭ এর একটি দল র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমদ এর নেতৃত্বে কক্সবাজার সংলগ্ন গভীর সমুদ্রে তাড়া করে ‘এফভি মায়ের দোয়া’ নামের ট্রলারটি ধরে ফেলে। সেখানে থাকা ৬ জনকে আটক করা হয়। আটকৃতরা হলেন মিয়ানমারের মংডুর সুতাহরা এলাকার মোঃ ইউনুছের ছেলে মোঃ যোবায়ের (৪২), কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার উত্তর সোনারপাড়া গ্রামের আব্দুল্লাহর ছেলে মোঃ আব্দুর রহিম (১৮), একই এলাকার জহির আলমের ছেলে মোঃ আশেক উল্লাহ (১৯), উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাইছড়ি গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে সামসুল আলম (২৫), সোনাইছড়ি গ্রামের ফরিদ আলমের ছেলে মোঃ হাসান (২০) ও একই এলাকার নাজির আহম্মদের ছেলে মো ঃ ইউনুছ (৫৫)। আটককৃতদের সাগরে তাৎক্ষনিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ট্রলারটির কোল্ড স্টোরের ভিতর রাখা ৭ সাত লক্ষ ৩০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। সাগরেই অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে উদ্ধারকৃত ইয়াবার মালিক মোঃ রশিদকে তার কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ কলাতলীতে অবস্থিত তার বড় ভাই মোঃ মফিজের বাড়ি থেকে আটক করা হয়। আটক ৭ জনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে র্যাব বাদি হয়ে মামলা দায়ের করবে। তাদের কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সোপর্দ করা হবে।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেফতাহ উদ্দিন আহমদ জানান, গত ৬ জানুয়ারী চট্টগ্রামের গভীর সমুদ্র থেকে ১০ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় যে মামলা দায়ের করা হয়েছেÑওই মামলায় অভিযুক্ত পলাতক আসামী মোঃ রশিদ ও তার ভাই মোঃ মফিজ। মফিজকেও গ্রেপ্তার র্যাব তৎপরতা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা ইয়াবার চালানগুলো কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ হয়ে বরিশাল-পটুয়াখালীসহ দেশের নানাপ্রান্তে ছড়িয়ে যাচ্ছে।