রুমেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর উপর নতুন ১টি সেতু নির্মাণের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রধান করেছে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদ। ১২ আগস্ট বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লেখা এ স্মারকলিপি পরিষদের কাছ থেকে গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। এ স্মারকলিপিতে তাদের অান্দোলনের দীর্ঘ দিনের স্বপ্নকেই লিখিত অাকারে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে দাবি জানানো হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব হয় অর্থ যোগানের মাধ্যমে সেতুর নির্মাণ কাজ যেন দ্রুত শুরু করা হয়।
এ স্মারকলিপিতে বলা হয়, ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক নির্মিত রেল সেতুটি পূর্ণাঙ্গ সেতু নয়। অথচ এই সেতু দিয়ে সব ধরনের যানবাহনই চলাচল করছে। ৮৫ বছরের পুরানো সেতুটিতে বিভিন্ন সময় সংস্কার কাজ করা হলেও সেটি নাজুক অবস্থায় আছে। ১৯৯৭ সালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১০ টনের বেশি পরিবহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক গবেষণায় সাত মাত্রার ভূমিকম্পে সেতুটি ধসে পড়ার শঙ্কার কথা বলা হয়েছে। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামের লালদিঘীতে নির্বাচনী জনসভায় প্রধানমন্ত্রী কালুরঘাট সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। ২০১২ সালে রেলমন্ত্রী কালুরঘাট সেতুর সাথে লাগোয়া দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য স্থান পরিদর্শন করেন এবং আরও কয়েকবার পরিদর্শন করে শুধু আশ্বাসই দিয়ে গিয়েছেন সবাই। বারবার আশ্বাসের পরও দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখতে না পেয়ে এখন দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছেন এখন। ২০১৪ সালের ১০ মে সর্বস্তরের জনতা সেতুর দাবিতে রাস্তায় নেমে এসে মানববন্ধন করেছে।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো.আব্দুল মোমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মুস্তফা নঈম, সদস্য সচিব রমেন দাশগুপ্ত, সিনিয়র সদস্য অমল কান্তি নাথ, আব্দুল মান্নান, সিরাজুল হক বাদশা, মোহাম্মদ ইউনুছ, যুগ্ম সদস্য সচিব আলমগীর মোরশেদ বাবু, সমন্বয়কারী আবু তাহের টুটুল, সদস্য রণজিৎ চৌধুরী বাচ্চু, তপন দাশগুপ্ত, মো.এহছানুল হক চৌধুরী খসরু, অ্যাডভোকেট কাজী এম ইকবাল, আবুল ফজল বাবুল, সাদেকুর রহমান সবুজ, বাবর মুনাফ, ক্যাপ্টেন মো.জসিম, এমদাদুল ইসলাম এবং শারজাহ শাখার সংগঠক মো.নাছির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ্ উদ্দিন স্মারকলিপি গ্রহনের পর পরিষদের সকলকে জানান, স্মারকলিপিটি গুরুত্ব সহকারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পৌঁছে দেওয়া হবে। এসময় তিনি পরিষদের সংগঠকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কর্ণফুলী নদীর উপর আরো ১টি সেতু গুরুত্ব অামি মনে করি। তবে এটা নিভর্র করছে পুরোপুরি সরকারের সিদ্ধান্তের উপর। এ দাবি গুরুত্ব সহকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানো হবে।
এছাড়া কালুরঘাটে নতুন সেতু নির্মাণ হলে চট্টগ্রাম শহরের ওপর চাপ কমবে। সেতুটি নির্মাণ করা হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামে শিল্পাঞ্চল করার পাশাপাশি পার্বত্য জেলা বান্দবানের সাথে যোগাযোগ সহজ হবে এবং চট্টগ্রামে কৃষিপণ্য পরিবহনও সহজ হবে বলে স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে মিনতি জানিয়ে স্মারকলিপিটিতে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের সংগঠকরা বলেন, যত দ্রুত সম্ভব হয় যেন পর্যাপ্ত অর্থায়নের করে বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজটি দ্রুত শুরু করা হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামের লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের দাবি বাস্তবায়নে আমরা আপনার পানে তাকিয়ে আছি। আমাদের বিশ্বাস-আপনার সরকারের পক্ষেই এই দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব। আপনি এই সেতুর দ্বার খুলে দিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে নবদিগন্ত উন্মোচন করবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।