চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী স্টোরে কর্মরত স্টোর মুন্সির দায়িত্বে থাকা মাহমুদা হাসান স্নিগ্ধা নামে একজন তৃতীয় শ্রেনীর নারী কর্মচারীর নামে সেগুনবাগান এলাকায় বরাদ্দকৃত বাসা ১৭৬/বি এর আঙ্গিনায় তার মালিকানাধীন অবৈধ প্রায় ১৫ টির বেশী সেমিপাকা বাসায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে তা বহাল তবিয়তে ব্যবহার করার একটি অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে উঠলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় সেটি তাদের নজরে আসেনি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেলের আবাসিক বাসাটির সীমানায় তৈরীকৃত অবৈধ সেমিপাকা প্রতিটি বাসার প্রতিটি বাসায় রেলের মূলগ্যাস লাইন থেকে অবৈধ উপায়ে গ্যাসের সংযোগ দিয়ে রান্না করছেন সেখানে থাকা ভাড়াটিয়ারা। ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাত হাজার পাঁচশত টাকার দুই রুমের প্রতিটি বাসায় আছে লাইনের পানি গ্যাস ও পিডিবির বিদ্যুৎ সংযোগ।
ঘটনাস্থলে থাকা নারী কর্মচারীর স্বামী জানান, তারা মাসিক একটি চুক্তিভিত্তিক অর্থের বিনিময়ে রেলওয়েকে ম্যানেজ করেই এই গ্যাস ব্যবহার করেন। এবং যাদের তিনি এই অর্থ প্রদান করেন, তার প্রমাণও উনার কাছে আছে। ম্যানেজ করা লোকদের নাম জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্ধকৃত বাসায় ব্যবহৃত ২টি চুলার জন্য গ্যাস বিল ১০৮০ ও ১ চুলার জন্য ৯৭৫ টাকা মাসিক বেতন থেকে কাটা হয়। তবে রেল কর্তৃপক্ষের কিছু অসাধু কর্মচারীদের যোগসাজসে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করে মাহমুদা হাসান সিগ্ধার মতো এই সব রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা সরকারকে ফাঁকি দিচ্ছে।
তার এই অনিয়ম ও দখলের বিষয়ে জানতে পাহাড়তলী আই ডাব্লিউ অফিস থেকে বরাদ্দকৃত বাসার তথ্য নিশ্চিত করে মাহমুদা হাসান স্নিগ্ধার কর্মস্থল এসএসএই(ইলেক) অফিসে গেলে সেখানে তাকে না পেয়ে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে ও কল রিসিভ করেননি।
বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ রফিকুল ইসলাম এর দপ্তর থেকেও কোন উত্তর মেলেনি।
সিনিয়র সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী (এইই) শেখ ফরিদ এর কাছে গেলে তিনি জানান, রেলের স্টাফ কোয়ার্টারের আঙ্গিনায় পিডিবির বিদ্যুৎ সংযোগ সম্পূর্ণভাবে অযৌক্তিক এবং অবৈধ। সুনির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ জমা হলে রেলের ভূসম্পত্তি বিভাগ অবৈধ বিদ্যুৎ,গ্যাস এবং অতিরিক্ত তৈরীকৃত বাসা উচ্ছেদ করার অভিযানে যায়।এইবিষয়ে রেলের পারিবারিক পেনশন বিভাগে কর্মরত হিসাবরক্ষক এহসান আলী ঐ নারী কর্মচারীর আপন ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন গ্যাস সংযোগের বিষয়টি অবৈধ। রেলে এইসব ঘটনা চলে আসছে বহুদিন থেকে। এরপর তিনি নিউজটি প্রকাশ না করার জন্য নিজেকে একটি রাজনীতিক সমর্থিত কর্মী দাবী করে।
এই বিষয়ে রেলের বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী’র কাছে গেলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অফিস টাইমে অতিরিক্ত প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানকে তার দপ্তরে উপস্থিত না পেয়ে মুঠোফোনে কল দিলে তাকেও পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষে রেলের পশ্চিমাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার নাজমুল ইসলামের কার্যালয়ে গেলে দাপ্তরিক কাজে তিনি ঢাকায় থাকায় তাকে পাওয়া যায়নি। পরে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে মুঠোফোনেও পাওয়া যায়নি ।