ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের শৈলকুপায় হোমিও ডাক্তার রেজাউল ইসলাম মিন্টুর কাছে ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে একটি গ্যাং গ্র“প। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় সন্ত্রাসী হামলা করে গুরুত্বর জখম করে নগদ ৫০ হাজার ৩ শত টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৯ জনের নামে ও অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩নং উমেদপুর ইউনিয়নের গোয়াইল বাড়ীয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে ঝিনাইদহ হোমিও মেডিকেল কলেজ এর প্রভাষক রেজাউল ইসলাম মিন্টুর উপর গত ১ জুন’১৫ ইং তারিখ সকাল ৯টার সময় তার নিজ বাড়ী থেকে মশুড়ী বিক্রয় করা নগত ৫০ হাজার ৩ শত টাকা নিয়ে শৈলকুপা ফেরার পথে গোয়াইল বাড়ীয়া গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে বাহারুল, আলাউদ্দিন, দাউদ, ইউনুচ ও একই গ্রামে বিপ্লব, রনি, আসাদুল, মুকুলসহ ২০/২৫জন নিজ গ্রাম থেকে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় তার বাম পায়ের হাড় ও ডানহাতের কনইয়ের হাড় ভাঙ্গাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর জখম হয়। এলাকাবাসী উদ্ধার করে প্রথমে তাকে শৈলকুপা হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডাক্তার রেজাউল ইসলাম মিন্টু জানান, বাহারুল, আলাউদ্দিন, দাউদ, লুৎফর ও টুলু দীর্ঘদিন যাবৎ আমার কাছে ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি, হুমকি-ধামকি দিত। এছাড়া টুলু সন্ত্রাসী বাহিনীকে সাথে নিয়ে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ীতে গিয়ে আমার মা ও ভাবীর কাছে বলে আসে আমি যদি টাকা না দিই তাহলে ওরা আমার ও আমার ভাইদের বাড়ীতে থাকতে দেবে না। তারা আরও বলে আমাদেরকে যেখানে পাবে সেখানেই হত্যা করা হবে। ওদের ভয়ে আমি ও আমার ভাইয়েরা কেউ বাড়ীতে যেতাম না। আমার মা ও দুই ভাবি সারাক্ষণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমি বাধ্য হয়ে শৈলকুপা থানায় একটি জিডি করি। তিনি আরও জানান আমি হাসপাতালে থাকা অবস্থায় আমার বাড়ীতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছোট ভায়ের বউ ববিতার কাছ থেকে একটি মৎস্য খামারের ১০বছরের চুক্তিনামা জোরপূর্বক নিয়ে নেয় এবং পরে পুকুর থেকে প্রায় ২লক্ষাধিক টাকার মাছ মেরে নেয়।
গোয়াইল বাড়ীয়া এলাকার একাধিক ব্যাক্তি জানান, টুলু, বাহারুল এর সংঘবদ্ধ দল এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। এদের বিরুদ্ধে গ্রামে একাধিকবার শালিস হয়েছে। এর মধ্যে একই গ্রামের আলী হোসেন নামে এক ব্যাক্তিকে মারধর করায় জরিমানা করেন ইউপি চেয়ারম্যান সাবদার হোসেন মোল্যা। এরপর আলী হোসেন এর বাবাকে মারধর, হুমকি-ধামকি দিয়ে টুলু জমি লিখে দিতে বলে। সে এখন জীবনের ভয়ে পলাতক ভাবে জীবনযাপন করছে। এছাড়া গোয়ালবাড়ীয়া এলাকার হাজী আকতার মাষ্টারকে ঝিনাইদহ কোর্ট থেকে ফেরার সময় তার উপর হামলা করে। আকতার মাষ্টারের ভাতিজা জিন্নাহকে মারধর করে জখম করায় টুলুকে আট হাজার টাকা জরিমান করেন চেয়ারম্যান। তার কয়েকদিন পরে ঝিনাইদহ হোমিও মেডিকেল কলেজ এর প্রভাষক রেজাউল ইসলাম মিন্টুর উপর এ সন্ত্রাসী তান্ডব চালায় এই সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র। এদের ভয়ে গ্রামের কেউ প্রশাসনের কাছে মুখ খুলতে সাহস পায় না। এই সুযোগে তারা মেতে উঠেছে নিরব চাঁদাবাজীতে।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি এম,এ হাসেম খান জানান, ডাক্তার রেজাউল ইসলাম মিন্টুর উপর হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।