পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী রবিবার সকালে এক সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফর সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি বলেন, ফরাসী প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো, বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিং এবং জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুটেরেসের যৌথ আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী ওয়ান প্ল্যানেট সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যাচ্ছেন। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্যারিসে সম্পাদিত জলবায়ু চুক্তির দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে ওয়ান প্ল্যানেট সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ ও তা অর্জনে উদ্ভাবনী ও বাস্তবায়নযোগ্য উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করবেন। প্যারিস চুক্তির দুই বছর পর পৃথিবী নামক এই গ্রহের পরিবেশগত জরুরি সংকট মোকাবিলা নিয়ে আলোচনার উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দ ও সারা বিশ্বের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নাগরিকদের অংশগ্রহণে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের অভিন্ন প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়ন কিভাবে কাজ করবে তা নির্ধারিত হবে সম্মেলনে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব বিবেচনায় বাংলাদেশ অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। এ ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে জলবায়ু অভিযোজন ও উপশম বিষয়ে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। একটি উন্নয়নশীল ও জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসাবে জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভিযোজন বিষয়টি বাংলাদেশ সব সময় অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গৃহীত পদক্ষেপ ও কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অর্জন ও সাফল্য বিশ্ব পরিমন্ডলে ব্যাপক প্রশংসা লাভ করেছে। প্ল্যানেট সম্মেলনের উচ্চ পর্যায়ের পর্বে প্রধানমন্ত্রী অভিযোজন ও জলবায়ু সহনশীলতা বিষয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যত্ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবেন। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ ও সাফল্য প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের সম্পর্ক ও সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহকে অধিকতর শক্তিশালী ও বিস্তৃত করার উদ্যোগ নেবেন। চলমান রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, সমুদ্র অর্থনীতিতে সহযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উেক্ষপণসহ বিভিন্ন সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের এলিসি প্রাসাদে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী প্যারিসে ইন্টার কন্টিনেন্টাল প্যারিস লা গ্রান্ড এ বাংলাদেশিদের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়া ওয়ান প্ল্যানেট সামিট উপলক্ষে আগত সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানসহ আয়োজক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্মানে একই স্থানে ফরাসি প্রেসিডেন্টের দেওয়া এক মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী প্যারিসের চার্লস ডি গৌল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আজ স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পৌঁছালে ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন অভ্যর্থনা জানাবেন। বুধবার তিনি প্যারিস ত্যাগ করে দুবাই হয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা পৌঁছবেন।