ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড়: ভোটার হচ্ছেন বিলুপ্ত ছিটমহলের বাসিন্দারা ভোটার তালিকার কাজ শুরু। অবশেষে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীরা ভোটার হতে যাচ্ছেন। পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ, বোদা ও সদর উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। ছিটমহলের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই কাজ চলবে আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত।
পঞ্চগড় জেলা নির্বাচন অফিসার দেওয়ান মো. সারোয়ার জাহান জানান, পঞ্চগড়ের বোদা, দেবীগঞ্জ ও সদর উপজেলার ৩৬টি বিলুপ্ত ছিটমহলে ৪১ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ১১জন সুপারভাইজার নিয়োগ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ শেষে রবিবার থেকে তারা তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানানো হয়, বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর মধ্যে দেবীগঞ্জে ৯ হাজার, বোদা উপজেলায় ২ হাজার এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫শ’ জন সম্ভাব্য ভোটারের তালিকা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার গাড়াতি ছিটমহলের চেয়ারম্যান মো. মফিজার রহমান জানান, এ জেলার ৩৬ ছিটমহলের মধ্যে ১৭টি ছিটমহলে জনবসতি রয়েছে অবশিষ্ট ১৯টি ছিটমহলে কেউ বসবাস করেন না। ভোটার হতে পারার কারণে ছিটমহলের বাসিন্দাদের মধ্যে বেশ উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
উলেখ্য, গত বছর ৩১ জুলাই মধ্য রাতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারত-বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় কার্যকর করে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির সরকার। তার আগে এসব ছিটমহলে দুই দফায় যৌথভাবে হেডকাউন্টিং (মাথা গণনা) সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এরপর ভারতের ভেতরে থাকা বাংলাদেশি ৫১টি ছিটমহল এবং বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ১১১টি ভারতীয় ছিটমহল বিনিময় হয়। এতে বাংলাদেশ পায় ১১১টি ও ভারত পায় ৫১টি ছিটমহল। এর মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্রে নতুনভাবে যোগ হওয়া ভারতীয় ১১১টি ছিটমহলের মোট ৩৭ হাজার ৫৩৫ জন নাগরিক বাংলাদেশি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানায়। ছিটমহল বিনিময় কার্যকর হলে চলতি বছরের ১১ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার এক গেজেটের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে। তারই ধারাবাহিকতায় বিলুপ্ত ছিটবাসীদের দেশের ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তসহ জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার লক্ষ্যে ১০ জুলাই থেকে ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু করেছে।