পুলিশের টর্চার সেলের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক

বিশেষ প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের মাদক – দুর্নীতি ও খুনি ওসি প্রদীপের কুকর্ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন দৈনিক কক্সবাজার বাণীর সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খান। পরে তাকে ঢাকা থেকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করেন কক্সবাজারের তৎকালীন পুলিশ সুপার মাসুদের নির্দেশে খুনি ওসি প্রদীপ। সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানকে মাদক,চাঁদাবাজি ও অস্ত্রসহ ৮ টি মামলা দিয়ে চালান দেন টেকনাফ থানা পুলিশ । দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়ে এখন প্রায় পঙ্গুত্ববরন করছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান । কিন্তু তৎকালীন এসপি মাসুদ এখনও কর্মরত আছে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়। সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তাফা জানান, কক্সবাজারের তৎকালীন এসপি মাসুদ হলেন আওয়ামী লীগ সরকারের দালাল। তার নির্দেশে কক্সবাজারে শত শত মানুষকে গুম করেন। তিনি আরো বলেন, আমি সংবাদ প্রকাশ করার কারণেই তৎকালীন ওসি খুনি প্রদীপ আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়। তারপর একের পর এক মামলা দেওয়া শুরু করে। এই বিচার একমাত্র আল্লাহর করবেন। এই আশায় বসে আছি।

অন্যদিকে ময়মনসিংহের আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার, অবৈধ সম্পদ ও ডিবি পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য, দুর্নীতিবাজ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রকাশ,আলেম ওলামাদের ধরে নিয়ে ডিবি অফিসে নির্যাতন। পুলিশের অসংখ্য অন্যায় নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক খায়রুল আলম রফিক। তারপর ময়মনসিংহের তৎকালীন পুলিশ সুপার বর্তমানে ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি শাহ্ আবিদ হোসেনের নির্দেশে ডিবির এসআই আকরাম হোসেন তাকে নগরীর চরপাড়া থেকে ধরে নিয়ে ক্রসফায়ার দিতে চেয়েছিলেন। পরে
তার গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে সিনিয়র সাংবাদিক সাইদুর রহমান রিমনসহ সারা দেশের সাংবাদিকদের কর্মসূচির কারণে তখন আর ক্রসফায়ার দিতে পারিনি ডিবি পুলিশ । পড়ে তার নামে তৎকালীন এসপি শাহ্ আবির হোসেনের নির্দেশে ডিবি কার্যালয়ে দুইদিন আটক করে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে দুটি মামলা দিয়ে আদালতে পাঠান। সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছেন। তাকে এনেছিলেন রিমান্ডেও। সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হোন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে । সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক দুর্নীতি, সরকারি টাকা হরিলুট, মাদক নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করাই তিনি কাল হলেন ? ময়মনসিংহের ডিবি পুলিশ যখন জানতে পারে, তার ভাই নেত্রকোনার বিএনপি’র প্রভাবশালী নেতা তখনই তার উপর আরও মামলা বেড়ে যায়।

ময়মনসিংহের তৎকালীন এসপি বর্তমানে রেঞ্জের ডিআইজি শাহ্ আবিদ হোসেন ময়মনসিংহ তৎকালীন আকরাম হোসেনকে দিয়ে বহু অপকর্ম করিয়েছেন। যা ময়মনসিংহবাসী আজীবন মনে রাখবেন। ময়মনসিংহ আরেক প্রতীযদশা সাংবাদিক আব্দুল কাইয়ুম। তাকেও তৎকালীন এসপি আবির হোসেনের নির্দেশে আকরাম হোসেন ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেন। তিনিও দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে জামিন মুক্ত হোন।

কক্সবাজারের সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান ও ময়মনসিংহের প্রতিযদশা সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক এখন চোখে ঝাপসা দেখেন। পুলিশের নির্যাতনের পর তাদের পরিবার নিয়ে এখন খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য পাসপোর্ট করতে চাইলেও মিথ্যা সাজানো মামলা থাকার কারণে পাসপোর্টের পজেটিভ রিপোর্ট না দেওয়ায় আজও পাসপোর্ট করতে পারেনি এই দুই প্রতিযদশা সাংবাদিক।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় খায়রুল রফিক এর কাছে। তিনি জানান, ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ সরকার। তৎকালীন সময়ে পুলিশ কর্মকর্তা যারা ছিল তারা হলো আওয়ামী লীগের লালিত বাহিনী। যখন যাকে খুশি তাকে ধরে এনে নির্যাতন চালাতেন। মামলা দিতেন। তাদের বিচার এই দুনিয়ায় হবে না। আল্লাহর কাছে দিয়ে রাখলাম। তবে সরকার গঠনের পরে আমি তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে বিচার চাইবো। আশা করি ন্যায় বিচার পাবো।

Comments (0)
Add Comment