স্টাফ রিপোর্টার:
সরকার বিএনপিকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকার একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধেও একের এক মামলা দেওয়া হয়েছে। এখন ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হত্যামামলায়ও জড়াচ্ছে। “এসবের উদ্দেশ্য একটাই- বিএনপিকে রাজনীতি তথা নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। যাতে তারা নির্বাচনে আসতে না পারে।” জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলা দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কারাবন্দির ৫০০ দিন উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে পত্রিকাটি। সরকারের দমননীতির চিত্র তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে বিরোধী দলের কথা বলার অধিকার হরণ করছে। আমরা রাজপথে প্রতিবাদ করবো, সেই অধিকারও আজ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ঘরোয়া আলোচনা করতে গেলেও এখন অনুমতির প্রয়োজন হয়।” “কেবল তাই নয়, সম্প্রচার নীতিমালার করে সরকার গণমাধ্যমের অধিকারও হরণ করতে চলেছে।” বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেয়ার সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সরকার সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিচ্ছে। কোন সংসদের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছে, যে সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।” বিচার বিভাগ ছাড়াও গোটা প্রশাসনকে সরকার দলীয়করণ করে ফেলেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মুখপাত্র। ২১ অগাস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “ঘটনার সময়েও আমরা এর নিন্দা জানিয়েছি, এখনো নিন্দা জানাই। সরকার প্রধান সম্প্রতি বলেছে, ২১ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে নাকি বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ তৎকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যরা জড়িত!” জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সরকার তারেক রহমানকে ওই মামলায় জড়াচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। আওয়ামী লীগের আমলে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, “সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বিএনপি জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী নয়; একে সমর্থনও করে না। আওয়ামী লীগের আমলে এই জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে। আমরা ক্ষমতায় এসে তা নির্মূলে ব্যবস্থা নিয়েছি।” আলোচনা সভায় মাহমুদুর রহমানকে সাহসী ব্যক্তি অভিহিত করে তার ওপর সরকারের নির্মম নির্যাতনের সমালোচনা করেন ফখরুল। তিনি বলেন, “এই অবৈধ ও দানব সরকারের কাছে তার মুক্তি চেয়ে লাভ নেই। তাদের পতন ঘটিয়ে মাহমুদুর রহমানকে মুক্ত করতে হবে।” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ফরহাদ মজহার, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সদরুল আমিন ও আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ বক্তব্য রাখেন।