উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় উফশী জাতের সরিষা ৩হাজার ৩শ ৮০হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। মাঠে মাঠে এখন শুধুই হলুদের সমারোহ। দৃষ্টি জুড়ে সরিয়ার হলুদ গাঁদার চিঠি। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌ মাছিরা। মৌ মৌ শব্দে পুরো মাঠ মুখরিত। কম খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোর ধানের জমিতে আগাম জাতের ও অধিক ফলনশীল এই ফসলের চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমে কৃষকরা সরিষার উচ্চ ফলনশীল জাত হিসাবে উফশী, টলি-৭ ও সম্পদ এই তিন জাতের সরিষা চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলাকার সরিষা চাষিরা।
এ বিষয়ে হরিশপুর গ্রামের কৃষক হাসেন সরদার জানান, সম্প্রতি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া স্মরণ কালের বন্যার কারণে পুষিয়ে নিতে আমরা জমিতে আগাম জাতের সরিষার আবাদ করেছি। এছাড়া ধানের মূল্যের দরপতনের কারণে প্রতি বছরই তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই বিকল্প পথ হিসাবে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি তিনি সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
গোনা গ্রামের কৃষক রহিম উদ্দিন জানান, এ মৌসুমে ধান চাষের উপযুক্ত ১০ বিঘা জমিতে তিনি সরিষার আবাদ করছেন। সরিষা তুলে নিয়ে ওই সব জমিতে তিনি বোরো ধান রোপন করবেন। সরিষার ফসল থেকে উর্পাজিত আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়ক হবে বলে তিনি দাবী করেন।
পশ্চিম বালুভরা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ জানান, সম্প্রতি বয়ে যাওয়া বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এলাকার কৃষকরা আগাম জাতের সরিষা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। এছাড়াও সরিষা উৎপাদনে সার কম প্রয়োগ করতে হয়, সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না। খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল হয়ে থাকে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম গোলাম সারোয়ার জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা সরিষা চাষের প্রতি ঝুঁকে পড়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। তিনি আরও জানান, এবারে প্রতি বিঘায় সরিষার পরিমাণ ৬মণ হারে ধরা হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে সরিষার বিভিন্ন রোগ-বালায় সম্পর্কে কৃষকদের করণীয় ও তা থেকে সরিষার আবাদ রক্ষার কৌশল সম্পর্কে সর্বদা কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।