কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় এবারের বন্যায় স্বল্প মেয়াদে রেকর্ড পরিমান ক্ষতিসাধিত হয়েছে। রাস্তাঘাট, রোপা আমন, আগাম সবজি, পুকুর মৎস্যঘের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গরু ছাগল, পায়খানা ও নলকুপ, নদী ভাঙ্গনে বাড়ীঘরসহ প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, সম্প্রতি বন্যায় ২৭ হাজার ৯৮৩ টি পরিবার পানি বন্দি হয়ে পরে। এতে সম্পুর্ন ক্ষতিগ্রাস্থ্য হয় ৬৬৬ টি, আংশিক ২২২টি ঘরবাড়ি ও ৩০০ টি পরিবার নদী ভাঙ্গনের শিকার। এতে ক্ষতির পরিমান ৫ কোটি ৩২লাখ ৮০হাজার টাকা।
উপজেলা প্রকৌশলী যুবায়েত আহমেদ বলেন, উপজেলায় মোট পাকা সড়ক ৬৮ কিঃ মিঃ, আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ্য ৩ কিঃমিঃ ইট খোয়াদারা নির্মিত ১১.৫০ কিঃমিঃ আংশিক ক্ষতি ১.৫০ কিঃমিঃ। কাঁচা সড়ক মোট ৩৮৫ কিঃমিঃ আংশিক ক্ষতি ৩.২০ কিঃমিঃ এতে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী জানায়, বন্যায় কৃষি খাতে সম্পুর্ন ক্ষতি ৯২ হেক্টর ও আংশিক ক্ষতি ৪ হাজার ২৫৮ হেক্টরের মধ্যে ৫% সম্পুর্ন জমির বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমান দারিয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
মৎস্য অধিদপ্তর কর্মকর্তা বদরুজ্জামান রানা জানান, উপজেলায় ৩০৬ টি পুকুর। এর মধ্যে ৮৫টি পুকুর পানিতে তলিয়ে পার ভেঙ্গে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতির পরিমান ৫৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ১১৫ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এতে ২টি বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলিন ও আংশিক ক্ষতি হয়েছে ২০টি। যার ক্ষতির পরিমান প্রায় ২৫ লাখ টাকা।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা এটিএম ডাক্তার হাবিবুর রহমান জানান, মোট প্লাবিত চারন ভুমির পরিমান ৭ একর, ক্ষতিগ্রস্থ গবাদি পশুর খামার আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৪টি, ক্ষতির পরিমান ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, হাঁস মুরগী খামারের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ৫টি, খামার ক্ষতির পরিমান ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বিনষ্ট খড়ের পরিমাণ ১০ মে.টন, ক্ষতির পরিমান ১লাখ ৮০হাজার টাকা, বিনষ্ট ঘাসের পরিমান ২০ টন, ক্ষতির পরিমান ৭৫ হাজার টাকা। মোট ক্ষতির পরিমান ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সেকবর আলী জানান, উপজেলায় চালুকৃত মোট নলকুপ ৩৯ হাজার ৬৪৭টি, সম্পুর্ন ক্ষতিগ্রস্থ নলকুপ ৩৩৩টি, আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ ১১১টি, স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা মোট ২৬ হাজার ২৫৯টি। সম্পুর্ন ক্ষতি ৩৩৩ টি আংশিক ক্ষতি ৫৪০টি। মোট ক্ষতির পরিমান ৯৪ লাখ ৭৮হাজার ৫০০টাকা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এবারের বন্যায় এলাকায় স্বল্প বন্যয় যে পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।