এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আগামী ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. সালাহ উদ্দিন শরীফকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী ও আশফাকুর রহমান। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজীম।
আদেশের পরে তিনি বলেন, পত্র-পত্রিকায় এসেছে লক্ষ্মীপুরের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্টে একজন সাবেক সিভিল সার্জনকে সাজা দিয়েছেন। এডিসি জেনারেলের সাথে ওই ডাক্তারের ব্যক্তিগতভাবে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সেটা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। পরে তাকে ডিসি অফিসে নিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দিয়ে পুলিশের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
ব্যারিস্টার আজীম বলেন, ওই রিপোর্ট আসার পর দুইজন আইনজীবী সংক্ষুব্ধ হয়ে, এখানে যে আইনের শাসনের ব্যত্যয় হয়েছে সে জন্য রিট দায়ের করেছেন। রিটের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রমের যে অপব্যবহার, সেটা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেছেন।
১৩ ডিসেম্বর এডিসি ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে হাজির হয়ে তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট সকল কাগজপত্রও সাথে আনতে বলেছেন। ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জনও ব্যক্তিগতভাবে আসবেন এবং আদালতের সামনে তিনি বক্তব্য রাখতে পারবেন।
ব্যারিস্টার আজীম আরও বলেন, সম্পূর্ণরূপে অপব্যবহার করে ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম যেভাবে তারা পরিচালনা করেছেন এবং যেভাবে একজন চিকিৎসককে অপদস্থ করা হয়েছে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং এতে আইনের শাসনের চরম ব্যত্যয় হয়েছে। তার বেলায় এটা হয়েছে তাহলে একজন সাধারণ মানুষের বেলায় কি হতে পারে?
উল্লেখ, সোমবার সকালে জেলা শহরের কাকলি শিশুঅঙ্গন বিদ্যালয়ে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শেখ মুর্শিদুল ইসলামের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে এনে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. সালাহ উদ্দিন শরীফকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে সালাহ উদ্দিনকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুজ্জামান।
অবশ্য মঙ্গলবার ৫ হাজার টাকার মুচলেকা দিয়ে তার জামিন মঞ্জুর করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মীর শওকত হোসেন।