লক্ষ্মীপুরে কৃষক হত্যা মামলায় ১৬ জনের যাবজ্জীবন, ভাবী হত্যার দায়ে দেবরের ফাঁসি

রুবেল হোসেন, লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে কৃষক লোকমান হোসেন হত্যা মামলায় ১৬ জনের যাবজ্জীবন ও গৃহবধু সুলতানা বেগম ফেরদৌসকে গলা কেটে হত্যার দায়ে দেবর বেলাল হোসেনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ সাইদুর রহমান গাজী ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. একেএম আবুল কাশেম পৃথক এ রায় দেন।
রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার সবুজ গ্রামের কৃষক লোকমান হোসেন হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মোস্তফা, মোঃ মনির, মোঃ নাহিদ, রেজাউল হক, মোঃ আনোয়ার হোসেন, মোঃ আলতাফ, মফিজুল ইসলাম ওরফে ধনা, রুবেল, সহিজুল ইসলাম, আইয়ুব আলী, মো. মোরশেদ, অহিদের রহমান, মোঃ জিন্নাহ, মোঃ আব্বাস, মোঃ হান্নান ও মোঃ মাকসুদ। তারা সবাই রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার সবুজ গ্রামের বাসিন্দা। রায়ের সময় তারা প্রত্যেকেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
কৃষক হত্যা মামলার এজাহার ও রায়ের কপি সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২১ জানুয়ারি সকালে সবুজ গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিস পন্ডিতের ছেলে কৃষক লোকমান নিজ গ্রামে সয়াবিন রোপন করতে যায়। এসময় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে মারাত্মক আহত করে। আহত লোকমানকে প্রথমে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে অবস্থার অবনতিতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকা ইসলামি ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি আনলে ১০ ফেব্রæয়ারি রাতে তার মৃত্যু হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি বড় ভাই আবদুল গফুর ১৬ জনকে আসামি করে রামগতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি (এপিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বিষটির নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘ শুনানি ও স্বাক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত কৃষক লোকমান হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ১৬ জন আসমিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদন্ডের রায় দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট একেএম হুমায়ুন কবির বলেন, আসামি পক্ষের আইনজীবি হিসবে বলবো এ রায় ন্যায়সঙ্গত হয়নি। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি উচ্চ আদালতে ন্যায়সঙ্গত বিচার পাবো।
এদিকে, লক্ষ্মীপুর পৌরসভার তেরবেকী এলাকার সুলতানা বেগম ফেরদৌস (২৫) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার দায়ে দেবর বেলাল হোসেনকে (৩০) ফাঁসি দিয়েছে আদালত।
গৃহবধূ হত্যা মামলার রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, যৌতুকের দাবিতে ২০১০ সালে গৃহবধু সুলতানা বেগম ফেরদৌসিকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গৃহবধুর বাবা হারুনুর রশিদ দেবর বেলাল হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় ১টি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে প্রধান আসামি বেলাল হোসেনকে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। মামলার অন্য ৪ আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।

Comments (0)
Add Comment