শাবিপ্রবিতে শিক্ষককে কুপিয়ে জখম, বিক্ষোভে উত্তাল ক্যাম্পাস

নাঈমুর রহমান নাঈম, সিলেট:

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদকে তার অফিসে ঢুকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে এক যুবক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন। হামলাকারী ব্যক্তিকে শিবিরকর্মী বলে দাবি করেছে ছাত্রলীগ। তবে ছাত্রলীগের এ দাবি অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিবির কমিটি। হামলার ঘটনার পর হামলাকারী ওয়েছ আহমেদকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ২য় সেমিস্টারের ছাত্র। শিক্ষার্থীদের মারধরে আহত হওয়ায় ওয়েছকেও ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক নিয়াজ আহমেদকে সকাল ১০টার দিকে এক যুবক তার অফিসে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে অফিস কক্ষে ফেলে রেখে ছাত্রটি পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে দ্রুত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে তার শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। এ সময় তার দেহে প্রচুর পরিমাণে রক্ত দিতে হয়েছে।

হামলার ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা হামলাকারী মাস্টার্সের ছাত্র ওয়েছ আহমদকে আটক করে ধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। সে এখন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে বলে জানা গেছে। হামলাকারী ওয়েছ আহমদ জানান, দুই বছর ধরে ওই শিক্ষক তাদেরকে খুব জ্বালাতন করছেন। তাই তাকে কুপিয়ে আহত করে এর প্রতিশোধ নিয়েছে সে। তবে উক্ত শিক্ষক কিভাবে তাদের জ্বালাতন করতেন তার কোন উত্তর পাওয়া যায়নি ওয়েছের কাছ থেকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা উত্তম কুমার দাস জানিয়েছেন, হামলাকারী ওয়েছ শিবিরের সক্রিয় একজন কর্মী। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময় সে শিবিরের মিছিল-সমাবেশ ও হামলায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সুজন জানান, হামলাকারী ওয়েছ আহমদ শিবিরের কেউ নয়। তার সাথে শিবিরের কোন সম্পৃক্ততা নেই। অনাকাক্সিক্ষতভাবে তাকে শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে, হামলার ঘটনার পর সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের সাথে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও। এতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠেছে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাস। আহত শিক্ষককে দেখতে ওসমানী হাসপাতালে গেছেন ড. জাফর ইকবাল ও তার পত্মী ড. ইয়াসমিন হকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমিনুল হক ভূঁইয়া জানিয়েছেন, হামলাকারীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতোমধ্যেই বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়া হবে। ওয়েছ আহমদকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার এএসআই সাইদুর রহমান।

Comments (0)
Add Comment