ফ্রান্সের তদানিন্তন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজির সরাসরি নির্দেশে ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা লিবিয়ার সাবেক নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে হত্যা করেছিল। ডেইলি মেইলের উদ্ধৃতি দিয়ে মিডলইস্ট আই রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। গাদ্দাফিকে গ্রেপ্তার করা হলে আর্থিক লেনদেনসহ অনেক গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা থাকায় লিবীয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল বলে এতে বলা হয়েছে। ব্রিটেনের প্রভাবশালী পত্রিকা ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকারী সারকোজি তার গোয়েন্দাদের পাঠিয়েছিলেন গাদ্দাফিকে হত্যা করতে। আরব বসন্তের প্রেক্ষাপটে গাদ্দাফির শাসন ভেঙে পড়ায় এসব গোয়েন্দা স্থানীয় সশস্ত্র গ্রুপগুলোতে ঢুকে পড়ে। তাদের এক এজেন্ট গাদ্দাফিকে গুলি করে হত্যা করেছিল। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা লিবিয়ার একটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে। সূত্রটি জানিয়েছে, গাদ্দাফিকে যদি গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো, তবে সারকোজির সঙ্গে তার লেনদেন সম্পর্কে সত্য তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা ছিল। এই ভয়েই তিনি গাদ্দাফিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ পত্রিকাটিতে বলা হয়, গাদ্দাফিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নীরব করে দেয়ার সারকোজির গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি ছিল। ২০১১ সালে জাতিসঙ্ঘ ম্যান্ডেটে ন্যাটো বাহিনী গাদ্দাফিকে উৎখাতের জন্য বোমা হামলা শুরুর আগ পর্যন্ত ইতালির সিলভিও বারলুসকোনি ও ব্রিটেনের টনি ব্লেয়ারসহ বেশ কয়েকজন ইউরোপিয়ান নেতার সঙ্গে গাদ্দাফির অত্যন্ত দৃঢ় সম্পর্ক ছিল। ২০১২ সালের মার্চে প্রকাশ পায় যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য গাদ্দাফি ৫০ মিলিয়ন ইউরো (৬৭ মিলিয়ন ডলার) দিয়েছিলেন সারকোজিকে। সারকোজি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গাদ্দাফিকে উৎখাতের পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী মাহমুদ জিবরিল ২০১২ সালে ইজিপ্টিয়ান টিভিতে বলেছিলেন, “বিপ্লবী বিগ্রেডগুলোতে মিশে যাওয়া বিদেশী এজেন্টারাই গাদ্দাফিকে হত্যা করেছিল।”