উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: কেবল অদম্য ইচ্ছা থাকলেই ছোঁয়া যায় সীমাহীন আকাশটাকে। হার মানে অভাব-দৈন্য, ধরা দেয় সফলতা। এমনি এক অদম্য শিক্ষার্থী নিজমা খানম। নড়াইল সদর উপজেলার বল্লারটোপ আইডিয়াল কলেজ থেকে নিজমা এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ ৫। ভ্যানচালক বাবার অভাবের সংসারে ক্ষণিকের আনন্দ ধরা দিলেও আর্থিক দৈন্যের কারণে উচ্চশিক্ষা নিয়ে নতুন করে সংশয় দেখা দিয়েছে তার পরিবারে। বাবার সামান্য উপার্জনে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় গ্রামের কলেজ থেকে বাণিজ্য শাখায় ভালো ফলাফল করেন নিজমা। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজমা তার বাবা ও মায়ের স্বপ্ন পূরণসহ দেশের কল্যাণে কাজ করতে চান। বিস্তারিত উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে,বল্লারটোপ আইডিয়াল কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক বাবলু সরকার জানান, নিজমা অত্যন্ত মেধাবী। তার বাবার পক্ষে পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব ছিল না। উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার সময় নিজমার ভর্তি থেকে শুরু করে পরীক্ষার ফরম পূরণ পর্যন্ত সব খরচ কলেজ কর্তৃপক্ষ বহন করেছে। মেধাবী এই ছাত্রী যদি পড়াশোনার সুযোগ পায় তাহলে আগামীতেও ভালো কিছু করতে পারবে। বল্লারটোপ আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান জানান, তার উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রয়োজন। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজমা ভবিষ্যতে ব্যাংকে চাকরি করতে চায়। অসহায় বাবা ও মায়ের স্বপ্ন পূরণ করে তাদের মুখে হাসি দেখতে চায়। সরেজমিন নিজমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়ির দক্ষিণে দোচালাবিশিষ্ট এবং উত্তরে ছোট একটি টিনের ঘর রয়েছে। পুবে একটি টিনের ঘর থাকলেও সেটি নিজমার বড় ভাইয়ের। ঘরে পড়াশোনার মতো পরিবেশ না থাকায় মাঝেমধ্যে ভাইয়ের ঘরে বসে পড়াশোনা করতে হয় তাকে। নিজমার বাবা মাহাবুবুর শেখ জানান, বাড়ির নয় শতক এবং বিলে ১২ শতক জমি ছাড়া তাদের আর কোনো জমিজমা নেই। ভ্যান চালিয়ে পাঁচজনের সংসার চালাতে হয়। নিজমা ছাড়াও তার ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ মাদরাসায় আলিম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। আর একভাই প্রতিবন্ধী এবং মা সবুরোন নেসা গৃহিণী।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর