অপরাধীদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে রাষ্ট্র ব্যর্থ হচ্ছে: ইমরান

নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও ব্লগার ইমরান এইচ সরকার। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসী, জঙ্গি বা আইন শৃ্ঙ্খলা বাহিনী যারাই খুন করুক না কেনো খুনকে খুনই বলা হবে। তিনি চান দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক এবং অপরাধী তার অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি পাক। “কিন্তু কোনোভাবেই চাই না এই অপরাধীর দায় দায়িত্ব আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিজেরাই তুলে নেবে।”
পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যার সন্দেহভাজন প্রধান আসামী নিহত হওয়ার পর বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেনে।
মাদারীপুরে কলেজ শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার ফাইজুল্লাহ ফাহিমের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এর ফলে এই ঘটনায় ভিকটিমদের বিচার পাওয়ারও সুযোগ থাকলো না। “এসব হত্যার মূল হোতাদের খুঁজে বের করারও আর কোনো ক্লু থাকলো না,” বলেন মি. সরকার।
তিনি বলেন, পুলিশ হেফাজতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় এটা পরিষ্কার যে রাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। “ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পূর্ব শর্ত হিসেবে অপরাধীদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্র ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে।”
ক্রসফায়ারে মৃত্যুর ঘটনাকে গল্প হিসেবে উল্লেখ করে মি. সরকার বলেন, পুলিশ যেসব গল্প শোনাচ্ছে সেগুলো সব একই রকমের। এগুলোর খুব বেশি বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
“পুলিশ গণমাধ্যমে যেসব স্ক্রিপ্ট সরবরাহ করে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ বন্দুকযুদ্ধের সময় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটলো না কিন্তু শুধু একজন জঙ্গি মারা গেলো, তখন আর সেটি জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে না।”
সন্দেহভাজন জঙ্গিদের হত্যা করার ফলে ব্লগাররা কি নিরাপদ বোধ করছেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগের তুলনায় তারা আরো বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
“আমি হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেও তার বিচার হয়তো হবে এই আস্থার জায়গাটিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কারণ অপরাধীদের হত্যার মধ্য দিয়ে অপরাধের বিচারের সম্ভাবনাও নস্যাৎ করা হচ্ছে।” তিনি বলেন, এধরনের হত্যাকাণ্ড বর্তমান সঙ্কটের কোনো সমাধান আনতে পারবে না।

Comments (0)
Add Comment