অপুকে ডিভোর্স নোটিশ দিলেন শাকিব!

গত কয়েকদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল ডিভোর্স হতে পারে শোবিজ জগতের এই সময়ের আলোচিত শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস জুটির। শেষমেষ বোধহয় সেই গুঞ্জনই সত্যি হলো। সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) স্ত্রী অপু বিশ্বাসকে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছেন স্বামী শাকিব খান।

প্রবীণ এক আইনজীবীর মাধ্যমে সোমবার তিনি অপুর কাছে ডিভোর্স লেটার পাঠান বলে তার পারিবারিক একটি সূত্র জানিয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত সেই চিঠি অপুর হাতে পৌঁছায়নি কিংবা তিনি পাননি। এ চিঠি পাঠানোর মধ্য দিয়ে শেষ হলো ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এ জুটির ৯ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাকিব খানের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, প্রায় মাসখানেক আগেই শাকিব খান ডিভোর্সের চিঠি তৈরি করে রেখেছিলেন। ভারতে শুটিংয়ে যাওয়ার মুহূর্তে সেই চিঠি অপুর কাছে পাঠিয়েছেন তিনি। সূত্র জানায়, ডিভোর্সের সেই চিঠিটি শাকিব তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে অপুর কাছে পাঠিয়েছেন। কিন্তু অপু সোমবার বিকাল পর্যন্ত চিঠি পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।

গত ১৭ নভেম্বর থেকেই এই দুই তারকা জুটির ডিভোর্সের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। গুঞ্জনটির জন্ম দিয়েছিলেন শাকিব খান নিজেই। আগের দিন ১৬ নভেম্বর ছেলে জয়কে কাজের মেয়ে শেলীর কাছে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে কলকাতা চিকিৎসা করাতে যান অপু বিশ্বাস। থাইল্যান্ড থেকে ফিরে পরের দিন শুক্রবার ছেলেকে দেখতে অপুর নিকেতনের বাসায় যান শাকিব। কিন্তু বাইরে থেকে তালা দেয়া থাকায় ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি কিং খান।

ওই ঘটনার পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শাকিব। সাংবাদিকদের বলেন, মা হিসেবে অপু বিগ জিরো। সন্তানের প্রতি যদি মায়া থাকতো তাহলে কাজের মেয়ের কাছে তাকে তালবদ্ধ অবস্থায় রেখে যেত না। তার বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।

তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি আসলে কী, সেটি সেদিন পরিষ্কার করে জানাননি নায়ক। কিন্তু সেটি যে ডিভোর্সের মতো কিছুই হতে পারে তা অনুমান করেছিলেন অনেকেই। আজ অপুকে ডিভোর্স পেপার পাঠানোর মধ্যদিয়ে সেই অনুমানই সত্যি হয়ে গেল।

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় দুই মুখ শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। অপু এক টেলিভিশন সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল ভালোবেসে বিয়ে করেন তারা। তাদের একটি ছেলেও আছে। সাক্ষাতকারে ছেলেও উপস্থিত ছিল। তার নাম আব্রাহাম খান জয়।

এই বিস্ফোরক তথ্যের পরই মূলত বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। শাকিব খান স্বীকার করেন। তবে টানাপোড়েন চলছিলই। যার রেশ তালাক পর্যন্ত যেতে পারে বলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন-এফডিসি পড়ার অনেকে বলেছেন।

অপুর ভাষ্য ছিল, মূলত বিয়ের পর শাকিবের বাসায় বেশিরভাগ সময় থাকতেন তিনি। তবে অনেকটা লুকোচুরি করে। মাঝে মাঝে শ্যুটিং শেষে নিজের বাসায়ও চলে যেতেন। সন্তান নেওয়া ও সম্পর্কের তথ্য প্রকাশ্য করতে চাওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে শাকিবের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে কলকাতার একটি হাসপাতালে নিজে বন্ডে সাইন দেওয়ার পর সিজার হয় অপুর। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তাদের ঘরে ছেলে সন্তান আব্রাহাম খান জয় আসে। তারপরও শাকিব এ খবর অপুকে গোপন রাখতে বলেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, দু’জনের ক্যারিয়ারের স্বার্থের কথা।

বর্তমানে শরীরের ওজন কমানোর জন্য বনানীর একটি ব্যায়ামাগারে নিয়মিত সময় দিচ্ছেন অপু। বগুড়ার মেয়ে অপু ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। ২০০৬ সালে পরিচালক এফ আই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেন। ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা তারা ৭০টির মতো ছবিতে জুটি বাঁধেন। আধুনিক বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি বলা হয় তাদের।

Comments (0)
Add Comment