ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী উপ-পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারকে অবশেষে শাস্তিমুলক বদলী করা হয়েছে। রোববার তিনি বদলীর আদেশ সম্বলিত ই-মেইল বার্তাটি হাতে পান।
ধারণা করা হচ্ছে, পাসপোর্ট গ্রাহীতাদের কাছ থেকে বেপরোয়া ঘুষ আদায়, মানুষের সাথে চরম দুর্ব্যবহার, দুর্নীতি ও অফিসের এক নারী কর্মচারীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার কারণে তাকে রাঙ্গামাটি পাসপোর্ট অফিসে বদলী করা হয়। ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে পদায়ন (চঃ দাঃ) করা হয়েছে রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ডিএডি ফরিদ উদ্দীন আহমেদকে। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইড সুত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে গত ২৪ আগষ্ট ডিএডি আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে হয়রানী, উত্যক্তসহ যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তদন্ত করতে ঝিনাইদহে আসেন প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (সংস্থাপন) নাসরিন পারভিন নুপুর। ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের এক নারী নিম্নমান সহকারী বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচারকের বরাবর এ অভিযোগ করেন।
ডিএডির বিরুদ্ধে লিখিত ভাবে অভিযোগকারী ওই নারীকেও ঢাকায় বদলী করা হয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য সহকারী উপ-পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই যোগদানের পর থেকে ঘুষের রেট আট’শ থেকে বৃদ্ধি করে ফাইল প্রতি নয়’শ টাকা করে আদায় করেন।
এ হিসেবে ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে দিনে আনুমানিক দুই লাখ টাকা করে ঘুষ আদায় করা হতো। ঘুষের টাকা না দিলে চরম ভাবে হয়রানী করা হতো। এ নিয়ে পাসপোর্ট গ্রাহীতাদের মাঝে ক্ষোভ এবং অসেন্তাষ ছড়িয়ে পড়ে। পদে পদে হয়রানী ও দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয় ঝিনাইদহের মানুষকে। ঝিনাইদহ পোসপোর্ট অফিসের ঘুষের টাকা প্রতি সপ্তাহে ভাগাভাগি করা হতো।
এর মধ্যে সহকারী উপ-পরিচালক মোত্তালেব সরকার ৬০% ও বাকী ৪০% টাকা সাধারণ স্টাফরা ভাগ করে নিতেন। কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিসে দায়িত্ব পালনকালে আব্দুল মোত্তালেব সরকার রহিঙ্গা স্মরনার্থীদের পাসপোর্ট দিয়ে বতির্কে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সরকারের উপর মহলকে জানানো হলে তাকে কক্সবাজার থেকে বদলী করা হয়। মঙ্গলবার ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে দেখা গেছে ঘুষ বানিজ্য চলছে আগেই মতোই। অফিসের স্টাফ আলপিন নাহার, সুপারভাইজার ইমরান, গৌতম কুমার সাহা, মাসুদ ও মেহেদী হাসানকে স্টোর রুম ও বাথরুমে ঢুকে ঘুষ নিতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে বিদায়ী সহকারী উপ-পরিচালক মোত্তালেব সরকার বদলীর খবর স্বীকার করে বলেন, আমরা সরকারী চাকরী করি। বদলী তো হতেই হবে। তবে তিনি ঘুষ আদায়, মানুষের সাথে চরম দুর্ব্যবহার, দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।