ঢাকার আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের উত্তর ভাদাইলের হাসান মঞ্জিলের ভাড়াটিয়া মো. মাহফুজ মোরশেদের স্ত্রী আইরিন সুলতানাকে (৩০) মারধর, শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। পারিবারি বিরোধের জেরে গত মঙ্গলবার পারিবারিক বিরোধের জেরে গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই নারীর দেবর মিজানুর রহমানের স্ত্রীর বড় ভাই মো. রায়হান (৩০), দেবর মিজানুরের স্ত্রী মোছা. মুন্নি (২৮), রায়হানের শাশুড়ি মোছা. কোহিনুর বেগম (৫০) ও তার লোকজনসহ এসে সন্ত্রাসী কায়দায় মারধর, শ্লীলতাহানী ও ধর্ষণচেষ্টা করে। এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আইরিন সুলতানা।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, স্বামী মাহফুজ মোরশেদসহ উত্তর ভাদাইল সাধু মার্কেট সংলগ্ন হোসনেআরা বেগম এর বাড়ি হাসান মঞ্জিল এ দীর্ঘদিন যাবৎ ভাড়ায় বসবাস করে আসছিলেন। মাহফুজ মোরশেদের ভাই ও আইরিনের দেবর মিজানুর রহমান মিরপুর এলাকায় বসবাস করে। দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মিজানুরের স্ত্রী মোছা. মুন্নি, মুন্নির বড় ভাই রায়হান ও তার শাশুড়ি কোহিনুর বেগমের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন উল্লিখিতরাসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোকজনসহ বাসায় এসে রুমের দরজা বন্ধ করে প্রথমে গালাগালি, পরে মারধর ও শ্লীলতাহানী করে।
আইরিন সুলতানা বলেন, ‘আমার দেবর মিরপুর এলাকায় থাকে। পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিবাদীগণ আমাদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি করিয়া আসছিলো। ঘটনার সময় বিবাদীগণ তাহাদের সহযোগী আরও ৪-৫ জন অচেনা লোকজন নিয়া আমাদের বাসায় প্রবেশ করে আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি গালি দিতে নিষেধ করিলে প্রথমে রায়হান, এরপর সকল বিবাদী মিলে আমাকে এলোপাতাড়ী মারপিট করিয়া আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করে। বিবাদী রায়হান আমার পরিহিত কাপড় চোপড় টানাহেচড়া করিয়া কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে ফেলে। আমার স্বামী ও শাশুড়ী মাফুজা বেগম ছাড়াইতে গেলে বিবাদীগণ তাদেরকেও অনেক মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। আমার বাসায় রাখা নগদ আড়াইলাখ টাকা নিয়া যায়। এসময় আমাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীগণ আমাদেরকে শান্তিতে থাকিতে দিবে না বলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়।’ রায়হানের সঠিক বিচারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে মাহফুজ মোরশেদ বলেন, আমার ভাই মিজানুর রহমানের কোনো খবর পাচ্ছি না। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই। সেই সাথে আমার স্ত্রী সুলতানাকে ধর্ষণের চেষ্টা ও মারপিট করার বিচার চাই।
তিনি বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে আমার বাসায় যারা হামলা চালিয়েছে এবং আমার স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টায় মারপিট করেছে সেই দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য আমার স্ত্রী আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। এই ঘটনার সাথে যারা জড়িত তারা যেন কঠিন সাজা পায়।
অভিযোগের বিষয়টি ছায়াতদন্তের জন্য র্যাব কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মাহফুজ মোরশেদ।
এ বিষয়ে বিবাদীদের বক্তব্য নিতে গিয়ে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে অভিযোগের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আশুলিয়া থানার (সাব-ইন্সপেক্টর) জিএম আসলামুজ্জামান আসলাম, এএসআই রুহিন মীর। এএসআই রুহিন মীর বলেন, মোছা. আইরিন সুলতানা নামের এক নারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। বাদী মামলা করলে আসামীদেরকে গ্রেফতার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে র্যাব জানায়, ধর্ষণের চেষ্টা বা শ্লীতাহানীর ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এরআগে ভাদাইলে একাধিক নারী গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এই নারীর বেলায়ও এমনটি হতে পারতো বলে মনে করছেন স্থানীয়রা এলাকাবাসী। তাই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।