ইরাকের তিকরিত শহরের পাশাপাশি কিরকুক থেকেও আইএস-কে হটিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে যৌথ বাহিনী। সোমবার উত্তরাঞ্চলীয় শহর কিরকুকে জঙ্গিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো মার্কিন জোটের বিমান হামলার ছবি প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড। এর পরপরই শহরটির ৪ টি গ্রাম পুনর্দখলের ঘোষণা দেয় কুর্দি যোদ্ধারা।
একইদিন ইরাকের মধ্যাঞ্চলীয় শহর রামাদিতে মার্কিন জোটের কয়েক দফা বিমান হামলায় আইএস-এর বিদেশী যোদ্ধাসহ অন্তত ৫০ জঙ্গি নিহত হয় বলে জানায় ইরাকি কর্তৃপক্ষ। দেশটির যৌথ বাহিনী জঙ্গিদের হটাতে বিমান হামলা চালানোর আহ্বানের পরপরই সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়।
পশ্চিমা নীতির কারণেই মধ্যপ্রাচ্যে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে- বিশ্লেষকদের পুরানো এই দাবি এবার নতুন করে ফুটে উঠলো স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্টের কণ্ঠে। সোমবার এক সাক্ষাৎকারে আইএস প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বারাক ওবামা বললেন, প্রেসিডেন্ট বুশের আমলে ইরাকে মার্কিন অভিযানের ফল হিসেবে জঙ্গি গোষ্ঠীটির উত্থান হয়েছে।
বারাক ওবামা বলেন, ‘ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আক্রমণের জন্যই আল কায়েদার জন্ম হয়েছিলো। আর তাদের থেকেই জন্ম নেয় আইএস। তবে এটি ছিল আমাদের অনিচ্ছাকৃত একটি ফল। বিশ্বের ৬০টি দেশের সমন্বয়ে আইএসকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে যে জোট গড়ে তুলেছি- আশা করি আমরা তার সুফল পাবো। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আন্তরাজনীতির সমাধান না হলে এই চরমপন্থাকে দমন করা অসম্ভব।’
২০১৩ সালের এপ্রিলে ইরাকি আল-কায়দা থেকে জন্ম হয় আএইসআইএল বা ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ত। এসময় সংগঠনটি খবরের শিরোনাম হয় সিরীয় প্রেসিডেন্ট আসাদ বিরোধী লড়াইয়ে অংশ নেয়ার মধ্য দিয়ে। পরে পাশ্চাত্যের কাছে সংগঠনটি পরিচিতি পায় আইএসআইএস নামে। একই বছর ইরাকের আনবার ও দিয়ালা প্রদেশের বিশাল এলাকা দখল করে নেয় আইএস। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের জুনে ইরাকের দিয়ালা প্রদেশ থেকে সিরিয়ার আলেপ্পো পর্যন্ত অঞ্চলে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয় জঙ্গি সংগঠনটি।
খেলাফত ঘোষণার শুরু থেকেই নিরস্ত্র মানুষের শিরশ্ছেদ, নারীদের ওপর নির্যাতন ও জোর করে বিয়ে করার মতো অমানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য কুখ্যাতি লাভ করে আইএস।