দুহাজার ছয়ে প্রথম। তখন থেকেই এশিয়া মহাদেশের এই দেশটি সকলের নজর কেড়েছিল। ভুঁরু কুঁচকে গিয়েছিল আমেরিকা থেকে জাতিসংঘের। এরপর যত দিন গড়িয়েছে, ততই নিজেদের শক্তি বারবার জাহির করে গিয়েছে উত্তর কোরিয়া। নিষেধ করেছে জাতিসংঘ। হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। তবু কাউকেই যে তোয়াক্কা করে না উত্তর কোরিয়া, তা শুক্রবার আরও একবার বুঝিয়ে দিল পিয়ং ইয়ং। জানুয়ারির পর সেপ্টেম্বরেই ফের পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটাল কিম জংয়ের দেশ।
লাগাতার মিসাইল পরীক্ষা চালিয়ে আসছিল উত্তর কোরিয়া। এবার বড় সড় ধাক্কা। যার ফলে ভূকম্পনের মাত্রা পাঁচ দশমিক তিন। পরমাণু শক্তি পরীক্ষা চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানকে। নিন্দায় আন্তর্জাতিক মহল। কারণ, চূড়ান্ত সতর্কতা সত্বেও তাঁরা যে বেপরোয়া, তা বুঝিয়ে দিল পিয়ং ইয়ং।
উত্তর কোরিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, মাঝারি দূরত্বের ব্যালিস্টিক মিসাইল যুদ্ধে যে কোনও দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে তারা যে প্রস্তুত, এই পরীক্ষা তা-ই প্রমাণ করে দিল।
কূটনৈতিক মহলের প্রশ্ন, জি ২০ শীর্ষ সম্মেলনের শেষ হতেই এমন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নতুন করে কী বার্তা দিল উত্তর কোরিয়া? উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরীক্ষার নিন্দা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। উত্তর কোরিয়া নিয়ে তিনি কথা বলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হিউ এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে। পরমাণু বিস্ফোরণের পর উদ্বিগ্ন জাপানও। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকার দাবি তুলেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তাঁর মন্তব্য, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরীক্ষা জাপানের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটা বড়সড় ধাক্কা। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের মন্তব্য, এই পরমাণু পরীক্ষা আসলে নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারা। এর ফলে আন্তর্জাতিক মহলে আরও কোণঠাসা হয়ে যাবে উত্তর কোরিয়া।
পরমাণু শক্তির প্রদর্শন নিয়ে কিম জংয়ের পাশে নেই উত্তর কোরিয়ার মিত্র দেশ চিন। তারাও সমালোচনা করেছে। বিস্ফোরণে কতটা রেডিয়েশন তা মাপতে বিমান পাঠিয়েছে আমেরিকা, চিন এবং জাপান। পরমাণু বিস্ফোরণের প্রভাব এসে পড়ে এশিয়ার শেয়ার বাজারে। আকস্মিক পরমাণু পরীক্ষায় কিছুটা হলেও পতন দেখা যায় এশিয়ার শেয়ার বাজারে।