একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি আর আমাদের রংপুরের রাজনীতি

আসসালামুআলাইকু,
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি আর আমাদের রংপুরের রাজনীতি। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি অনেকের আবার গায়ে লাগবে, ভাইদের রাজনীতি চলে আমাদের।

বাবার হাত ধরে রাজনীতিতে আসা, আর দেখতে দেখতে ১৩টি  বছর কেটে গেলো এই এসবের সাথে।

আমি যখন ক্লাস এইটে তখন প্রথম মিছিলে যোগদান আর রংপুরের রাজনীতিবিদদের সাথে পরিচয় শুরু।

আমার রংপুরে প্রথম পছন্দের মানুষটি ছিলেন মরহুম মনছুর আহমেদ, সভাপতি রংপুর জেলা আওয়ামীলীগ। এর পর অনেকের সান্নিধ্য পেলাম খুব কাছ থেকে দেখবার। ছাত্র রাজনীতির কারণে সকল স্থানে উঠা বসা হয়েছে আমার।
বাবার মুখে শুনেছি রংপুরের অনেক কৃতি সন্তানের নাম। যেমন সিদ্দিক হোসেন ,এ্যাড. গাজী রহমান, এ্যাড আলতাব, এ্যাড নজরুলসহ আমার দেখা মরহুম শাহ্ আব্দুর রাজ্জাক স্যার (সাবেক সাংসদ) তাদের অনেকের রাজনীতি ছিলো বঙ্গঁবন্ধুর সাথে। মনছুর আহমেদ চাচা মারা যাবার পরে আমার নজরে আসে ভাই রাজনীতি। তখন সবাই বলতো একটা মন্ত্রী নাই আমাদের কত আফসোস আমাদের দেখার কেউ নেই। আজো নেই রংপুর সদরের অভিভাবক!

বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি এই মানুষটার সাথে যখন পরিচয় হয় খুব অবাক হয়েছিলাম।
একজন মানুষ এত বড় মাপের যার অবস্থান দেশে অনেক উচ্চ পর্যায়ে। এই মানুষটি এত মিশুক আর ভালো চিন্তা ভাবনার, তার চিন্তা শক্তি অনেকদূর। কারণ এই ভদ্রলোকের রয়েছে ৫৪ বছরের সফল রাজনীতির ইতিহাস। ১৯৬৬ সালে মেট্রিক, ৬৯ -এ ছাত্র নেতা গণ আন্দোলনে, ৭০ এর নির্বাচন,৭১ এ পিতা-পু্ত্র একই সংঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন।
এরপর ১৯৭২ সালে ঢাকা মহানগর দক্ষিনের ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৭৩-৭৪ ঢাকা তৎকালীন বৃহত্তর গুলশান বেরাইদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সালে টানা ২২বছর আওয়ামী লীগ গুলশানের সভাপতি এক বরেণ্য ইতিহাস।

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদ গ্রহণ পরে অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক।
দলের দুর্দিনে ছিলেন নেত্রীর অতন্দ্র প্রহরী। সেই সাথে বিজিএমই এর সভাপতি ছিলেন তিনি।
তার কন্যাদ্বয় ব্যাবসা দেখাশোনা করতেন।
সারাজীবন মানুষের কল্যানের কথা ভেবেছেন এই মানুষটি। জাতীয় সংসদে দাড়িয়েও রংপুরের উন্নয়নে ছিলেন সোচ্চার এবং আছেন। যা কিনা রংপুরের আর সদস্যগণ বলতে পারেন নাই এবং তার বলিষ্ঠ বক্তব্যের মধ্যে পাওয়া যাবে এই উত্তর অঞ্চলের উন্নয়নের কথা।
এই ভদ্র লোকের সহধর্মিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে মাষ্টারস’ করে কিছুদিন শিক্ষকতার পর এখন তার কিছু সোশ্যাল ওয়ার্ক করেন।
মাননীয় মন্ত্রী রংপুরে নিজ অর্থায়নে করেছেন মুক্তিযাদ্ধা বাবার নামে কলেজ, বঙ্গঁবন্ধুর নামে করেছেন হাসপাতাল, ভালুকায় গড়েছেন বৃদ্ধাশ্রম।এছাড়া অসংখ্য উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। আজকের তিতুমীর কলেজ তারই নাম করন এ অবদান। আমার দেখা মতে ব্যাক্তি জীবনে চাওয়া পাওয়া বা তাকে কেনা বেঁচার সুযোগ নেই।

এই মানুষটি বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে রাজনিতেতে আসা আর (রংপুর-৪) পীরগাছা কাউনিয়া বাসি তাকে সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত করেন ৩ বার। আর এই কৃতি সন্তান রংপুরের গর্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাকে বাণিজ্যমন্ত্রী করেন । রংপুর এতদিন পর পূর্ণ মন্ত্রী পেলো, আর আমরা তার কাছ থেকে যা পেলাম।
আমি সংযুক্তি দিয়ে দিবো –

রংপুর সার বাফার গোডাউন
• সিএসডি গোডাউন
• রংপুর মেডিকেল কলেজ এর পাশে ক্যান্সার হসাহপাতাল
• রংপুররের ক্রীড়া উন্নয়ন এর জন্য ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ।

এছাড়া তিনিই প্রথম সৈয়দপুর বিমানবন্দর চালুর দাবী করেন যা তার সংসদ বক্তব্যের মধ্যে পাওয়া যাবে।

এ ছাড়া রংপুরের হয়ে যেই দাবি গুলো তুলে ধরেন –

রংপুরের তিস্তা নদীর পাড়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বেসামরকি ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেন।

রংপুর বিভাগের রংপুর জেলায় একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ এর জন্য , যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেন।

রংপুরে বিভাগীয় যাদুঘর ইতিমধ্যে অনুমোদন লাভ করেছে।

সংসদে গ্যাস দাবি করে এবং যার কাজ পাইপলাইন চলোমান।

আমার কাছে যা ডকুমেন্ট আসে তাই উল্লেখ্য করলাম আর বাহিরে আরো অনেক কিছু করেছেন । সংসদে রংপুরের মানুষের সকলের মনের আশা আকাঙ্খা তুলে ধরেছেন। আর কোন সাংসদ নিজের এলাকা ছাড়া গোটা রংপুর নিয়ে ভেবেছেন? আপনাদের কাছে প্রশ্ন রইল।

এখন আসি আপনাদের যা অভিযোগ-

১. পেঁয়াজের মূল্য!

• আপনারা জানেন আমরা যে পেঁয়াজ খাই তার কতো শতাংশ আমরা উৎপাদন করি? বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর কাজ ব্যাবসার বাজার উন্মুক্ত করা এর নতুন সব দ্বার উন্মুক্ত করে দেশের অর্থনীতির ভীত তৈরি করা। আমার জানা মতে, বাণিজ্য মন্ত্রী অনেক আগেই ট্যাক্স ফ্রি করে বাজারে পেঁয়াজ স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার উদ্যোগে অনেক প্রতিষ্ঠান পেঁয়াজ আমদানি করছ। জরিমানা ও বাজার মনিটরিং ও করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তাহলে কৃষি মন্ত্রণালয় এর কাজ ছিল ঘাটতি কোথায়, কখন সরবরাহ দরকার । সেই সাথে উৎপাদন ও ঘাটতি সম্পর্কে বিস্তার বিবৃতি দেয়া। টিসিবি ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। যাই হোক আসল কথায় আসি, বাংলাদেশের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক দিক বিবেচনায় মালদ্বীপ। তাই আগের দামে পেঁয়াজ রপ্তানি অব্যাহত রেখেছে ভারত। আর বাংলাদেশের জন্য এক লাফে তিনগুণ পেঁয়াজ এর মুল্য মূল্য ভারত। কিন্তু কেন? -উত্তর হচ্ছে পরশ্রীকাতরতা। ভারতের ইকোনমিকর অবস্থা খুবেই নাজুক বর্তমানে, সেদিকে বাংলাদেশর ইকোনমি শক্তি শালী হচ্ছে। আর এ অবস্থায় কিছু ডলার পন্য প্রতি বাড়িয়ে দিলে মন্দ হয় না এই ভাবনা ভারতের। ভারতের মহারাষ্টের নাসিক অঞ্চল টাই পেয়াজ হয় বেশী। বিপদে এগিয়ে না আসলে অন্য রাষ্ট্র পেঁয়াজ রপ্তানি করে যেমন-মায়ানমার, মিশর, তুরস্ক। এদের থেকে সবসময় আমদানি করা শ্রেয়। আন্তর্জাতিক বাজারে সব কিছু এল সি দিয়ে আমদানি করতে হয়, ডলার এর মান, সেই দেশের থেকে আসতে সময় নির্ভর করে । আর এসব কে পুঁজি করেছে সিন্ডিকেট। প্রধানমন্ত্রী মিশর থেকে পেঁয়াজ এনেছেন। কার্গো বিমানে জরুরী ভাবে তুরস্ক ও মিশর থেকে পেঁয়াজ আনা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি এই সংকট নিরসন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন দিন রাত এক করে এ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছেন । তিনি জানেন কি ভাবে  এই সংকট সমাধান হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশ এর পন্য রপ্তানিতে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। যার মধ্যে ল্যাটিন আমেরিকা ও রাশিয়া ফেডারেশন অন্যতম।

বিশ্বাস রাখুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাণিজ্য মন্ত্রীর উপরে। আমরা যদি ১৮কোটি মানুষ ধানে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারি। পেঁয়াজের আবাদকে সেই পর্যায়ে নিতে কৃষিবিদ সহ কৃষিমন্ত্রনালয়কে সে উদ্যোগ নিতে হবে। দেখুন মাঝে ভারত গরু রপ্তানি বন্ধ করেছিলো। আমরা ধরে নিয়েছি ১০০০/১২০০ টাকা হবে কেজি মাংসের ।
এখন কি সেই ঘাটতি রয়েছে?? শুধু পেঁয়াজ নয়, আমরা অনেক কিছুইতে নির্ভরশীল। যেমন তেল, চিনি ছোলা, মসল্লা ইত্যাদি।

২. গার্মেন্টস নিয়ে মন্তব্য সাম্প্রতিক।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর অধীনে অনেক দপ্তর থাকে। গার্মেন্টস শিল্প কিন্তু শিল্প মন্ত্রণালয় এর অধীনে। বাণিজ্য খাত তাদের সকল সহযোগিতা করে আন্তর্জাতিক বাজারে। সেইদিন মন্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন আপনারা গার্মেন্টস এর বিষয় কি করবেন । তিনি বলেছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালাতে পারবে। কিন্তু কারা চালাতে পারবে সেটা কেটে মিডিয়ায় আসলো। এই যে পিপিই, মাস্ক অন্যান্য কারখানায় জীবনমান রক্ষায় যা তৈরি হচ্ছে তাদের চালাতে বলেছেন। তাহলে ওনার বলা উচিৎ ছিলো দরকার নাই এসবের সব বন্ধ! আমাদের কিছু লাগবে না?

প্রশ্ন আপনার কাছে রইলো! এই দুর্যোগে উনি কি এটা বলতে পারেন তার মতো ব্যাক্তি। এর মাঝে দেখেছেন গার্মেন্টস মালিকদের ভুল বুঝাবুঝিতে কি ঘটলো শ্রমিকদের সাথে মিথ্যা কথা বলে শুধু মন্ত্রী এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর অপচেষ্টা করা হলো। এখানে গারমেন্টস খোলা রাখা বা না রাখা শিল্প ও শ্রম মন্ত্রনালয়ের ব্যাখ্য ছিলো না এবং যা তাদের উপর বর্তায়। যখন মন্ত্রী বলেছেন ৫ হাজার কোটি টাকা ফ্রিতে নয় ২% সুদে। তখনি ষড়যন্ত্র করে তাকে ভিলেন বানালেন তারা এবং একধরনের লেখকের মাধ্যমে বাণিজ্যমন্ত্রীর ব্যার্থতা দাবী করা হচ্ছে যা কিনা পূর্বে সুবিধা পাওয়া সিন্ডিকেটরা তৎপর হয়েছে।
এখন তারা এই মন্ত্রীর কাছে বা তার দপ্তরের কাছে সুবিধা না পাওয়ার কারণে। এই ক্রান্তিলগ্নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পরামর্শে বানীজ্য মন্ত্রী মহোদয় এর নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছে তার সচিব থেকে শুরু করে সবাই। সচিব নিজে মাঠে নেমে কাজ করছেন।

তার মতো ব্যাক্তিকে নিয়ে আজ বন্দনায় মেতেছি। একবার বিশ্লেষণ করে দেখিনি কোথা থেকে কি। এক বীর মুক্তিযোদ্ধা
টিপু মুনশি মন্ত্রী থেকে চলে গেলে কিছু হবেনা। রাষ্ট্রের যা হবে সে হারাবে পরিচ্ছন্ন নেতা ও মানুষ । সিন্ডিকেট আর রাষ্ট্রের শত্রুদের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছেন তিনি।

রংপুরের এক শ্রেণীর চাটুকার রাজনীতিবিদ ও নব্য আওয়ামী মুখশধারি আজ বুনো উল্লাস কিংবা প্রচারণায় নেমেছে তার অপসারণের। সাথে সুযোগ করে দিচ্ছেন জামাত-বিএনপি’র পেতাত্মা শত্রুদের সমালোচনার। তাদের প্রশ্ন করুন তাদের ভাইয়ের দারা কিংবা নেতাদের দারা আজ রংপুরের কি উন্নতি হয়েছে? দলের কর্মী কি পেয়েছে। আজ রংপুর -৩ আসনের অভিভাবক নেই কেন? আজ নেতৃত্ব দেয় কারা?

টিপু মুনশিকে নিয়ে যারা মেতেছে তাদের অবস্থান দেখুন। কারা এরা? সাধু সাবধান আপনাদের উপরে ভর করে তারা স্বার্থ হাসিলে মত্ত।
চলমান করোনা মহামারীতে ২১হাজার পরিবারকে খাদ্য সহযোগিতা দিয়েছেন এই মানুষটি তার আসনে। এছাড়া রংপুরে দিয়েছেন নিজের আত্মপ্রচার না করে। প্রতি মুহূর্তে কাজ করছেন যিনি প্রচারণা ছাড়াই।

টিপু মুনশিকে নিয়ে কুচক্রে মেতেছেন তারাই যাদের উদ্দেশ্য আর চিন্তা অসৎ। কারণ তিনি ভাইয়ের রাজনীতি করেন না তিনি অসৎদের পাত্তাদেন না। আর কোথাকার কারা রাতারাতি কিছু দিয়ে শিরোনামহন প্রথম পেজের।

একান্ত ভাবনা থেকে
শিহাব চৌধুরী
এমবিএ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
বিএসসি ইইই (আইইউবি)
সহ-সভাপতি, রংপুর জেলা ছাত্রলীগ।
সাবেক জার্নালিস্ট, ইউনিসেফ।
প্রতিষ্ঠাতা, নীড় (সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন) ।

Comments (0)
Add Comment