আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কলম্বিয়ায় প্রায় পাঁচ দশকব্যাপী যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে আজ সেদেশের ফার্ক বিদ্রোহীদের সাথে সরকারের এক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৫২ বছরের এই সশস্ত্র সংঘাতে আনুমানিক ২ লাখ ৬০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়, আর বাস্তুচ্যুত হন ৬০ লাখেরও বেশি লোক।
কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস বলেছেন, শান্তিচুক্তি হলেও যারা অপরাধ-নির্যাতন করেছে, তাদের রেহাই দেয়া হবে না। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. সান্তোস বলেন, এই প্রথম এমন একটি শান্তিচুক্তি হতে যাচ্ছে যাতে যারা সংঘাতের শিকার হয়েছেন তাদের স্বার্থকেই বিষয়টির নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
এ উপলক্ষে কার্তাগেনায় সারাদিন ধরে অনুষ্ঠান হবে, এবং শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন প্রেসিডেন্ট সান্তোস এবং ফার্ক বিদ্রোহীদের প্রধান তিমোচেংকো বা তিমোলিওন হিমেনেস। এ অনুষ্ঠানে আড়াই হাজার অতিথির মধ্যে থাকবেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, এবং কিউবার নেতা রাউল কাস্ত্রো।
এই শান্তিচুক্তিতে কোন সাধারণ ক্ষমার ব্যবস্থা থাকছে না, যে বিধান এ অঞ্চলের অন্য কোন চুক্তিতে ছিল না । এতে ফার্ক বিদ্রোহী এবং কলম্বিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী – উভয়ের জন্যই বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার, বা দোষ স্বীকার করে ক্ষমা ও মৈত্রী পুনপ্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা থাকছে।
চুক্তি অনুযায়ী ফার্ক বা রিভোলিউশনারী আর্মড ফোর্সেসে অব কলম্বিয়া – যা ১৯৬৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সশস্ত্র শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল – একটি নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে। তারা ২৬৪ আসনের পার্লামেন্টে ১০টি আসন পাবে। তারা ইতিমধ্যেই তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় মাদক উৎপাদন বন্ধ করতে রাজী হয়েছে।
এ ছাড়া তারা ১৮০ দিনের মধ্যে অস্ত্র সমর্পণ করবে এবং ফার্কের সাড়ে সাত হাজার যোদ্ধাকে জাতিসংঘের পরিচালিত ক্যাম্পে সরিয়ে নেয়া হবে। এই চুক্তি আজ স্বাক্ষরিত হলেও তাকে একটি গণভোটের মাধ্যমে জনগণের অনুমোদন পেতে হবে।