কলেজ শিক্ষার্থী জিদনীর মৃত্যুরহস্য উন্মোচনের দাবিতে মানববন্ধন

নালিতাবাড়ি সংবাদদাতা:
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নালিতাবাড়ী পৌর শহ‌রের শিক্ষার্থী তায়েবাতুন জিদনী (২৫) মৃত্যুর ঘটনায় স‌ঠিক তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের দাবী‌তে মানববন্ধন কর্মসূ‌চি পালন করা হ‌য়ে‌ছে। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার সময় সেঁজুতি সাংস্কৃতি একাডেমি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আয়োজনে উপ‌জেলা প‌রিষ‌দের সাম‌নের সড়‌কে ঘন্টাব‌্যা‌পি এই মানববন্ধন করা হয়।

তা‌য়েবাতুন জিদ‌নী পৌরশহ‌রের শি‌ক্ষিকা হাসনা হেনা ও জয়নাল আ‌বে‌দি‌নের সন্তান। জিদনীর স্বামী ইয়াসির আরাফাত চার মাস যাবত ফ্রান্সে বসবাস কর‌ছেন। জিদ‌নী ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজে সমাজ কর্ম বিভাগে ৪র্থ বর্ষে শিক্ষার্থী ছি‌লেন। সে ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলি মসজিদ রোড এলাকার নাসা টাওয়ারের হোষ্টেলে থে‌কে পড়ালেখা কর‌তেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ,গত ৬ জুন ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলি এলাকার নাসা টাওয়ারের হোষ্টেলে রাতের আধারে তাঁর রহস‌্যজনক মৃত্যু হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা ব‌লে ধারণা কর‌ছে। গত ৭ জুন পুলিশ জিদনীর লাশ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তে পাঠায়। এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। তবে এ মৃত্যুর আলামত হিসেবে পুলিশের কাছে জিদনীর ব্যবহিত মুঠোফোন জব্দ আছে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রুমের ভিতরে জিদনীকে জানালার পাশে খাটের উপরে হাটু পেছন দিকে ভাঁজ করা বসা অবস্থা পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে। জানালার গ্রিলের সাথে একটি ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচানো ছিল। প্রাথমিকভাবে বুঝা যাচ্ছে সে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। কিন্ত জানালার গ্রিলের সাথে কিভাবে আত্মহত্যা করা যায়। এটা রহস্যজনক হত্যা। যদি আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে এর পেছনে অব্যশই কারো প্ররোচনা রয়েছে। জিদনী আত্মহত্যা করেনি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। এর পেছনে কে দায়ি তা বের করে আনতে হবে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

এ সময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নবরুপী ক্রিড়া সাংস্কৃতিক গোষ্টির সভাপতি শ্যামল দত্ত, তারাগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম, সেঁজুতি বিদ্যানিকেতনের প্রিন্সিপাল মুনিরুজ্জামান, নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবে সভাপতি আবদুল মান্নান, সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান, আতিকুর রহমান, অবনী অনিমেষ,জিদনীর শ্বশুড় আবুল হোসেন, শাশুড়ি রাহিমা হুসাইন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ ব্যাপারে নিহত জিদনীর মা হাসনাহেনা বলেন,আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে যে কেও আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। আমি চাই দ্রুত ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনটা দেওয়া হোক। সেটা দেখে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো। আমি চাইনা জিদনীর মত আর কারও মায়ের বুক খালি হোক।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে। এখন সেই প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে কারও প্ররোচনায় এই হত্যা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment