এদিকে সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কুমরপুর এলাকায় কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী মহাসড়কে পানি ওঠায় ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ গওয়ার উপক্রম হয়েছে। হুমকীর মুখে পড়েছে চিলমারী শহর রক্ষা বাঁধ।
গত ৮ দিনে নদ-নদীর অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে জেলার কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, নাগেশ্বরী, রৌমারী, রাজিবপুর, ফুলবাড়ীসহ ৯ উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৫৭ ইউনিয়নের প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ। ঘরে খাবার না থাকায় খাদ্য সংকটে পড়েছে বানভাসী মানুষেরা। বিশুদ্ধ পানি ও গবাদি পশুর খাদ্য সংকটে দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যার্তদের। সরকারী ভাবে ত্রান তৎপরতা শুরু হলেও তা জুটছে না অনেকের ভাগ্যে। বন্যা কবলিত এলাকায় কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় বিছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের কালির আলগা চরের বাসিন্দা আবু তাহের জানান, টানা বন্যায় ঘরে খাবার না থাকায় বউ-বাচ্চা নিয়ে কোন রকমে একবেলা খেয়ে দিন পার করছি। গবাদি পশুসহ বাড়ি-ভিটা ছেড়ে আশ্রয় নিতে উচু জায়গা খুঁজছি।
একই চরের নুর মোহাম্মদ জানান, ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের লোকজনকে উচু স্থানে পাঠিয়েছি। আমি নৌকা নিয়ে বাড়ি পাহারা দিচ্ছি। ত্রান সহায়তা এখনো পাই নাই। নিজেদের এবং গরু, ছাগল, মুরগীর খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় খুব কষ্টে আছি।
কুড়িগ্রামে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আকতার হোসেন আজাদ, ৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ১শ ৯২ মেট্রিক টন চাউল বিতরন করা হয়েছে। এক হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা বিতরনে কাজ চলছে। নতুন করে ৫শ মেট্রিক টন চাউল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন থেকে ত্রান তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। দুর্গম চরাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ ত্রান সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেন।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ও দুধকুমারের পানিও।