মশিউর রহমান, আশুলিয়া (ঢাকা)ঃ শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় আহত গার্মেন্টস কর্মী রাশেদা বেগম-২৬ সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলার ৬১০ নম্বর কেবিনে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। জানা যায় যে, রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানাধীন খালকোলা এলাকায় রাশেদার গ্রামের বাড়ি। বাবা আব্দুর রব একজন দিনমজুর আর মা মমতাজ বেগম পরের বাসায় ঝিঁয়ের কাজ করেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে রাশেদাই বড়। ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পরে অভাব আর অনাটণের কারণে তার বাবা তাকে একজন দিনমজুরের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়। সেখানেও তাকে অভাব আর অনটণকে সঙ্গী করে নিতে হলো। একদিকে বাবা-মা আর ছোট ভাই, অন্যদিকে স্বামীর সংসরের বোঝা তাকেই বহন করে নিতে হলো। তাদের মূখে দু’মুঠো অণ্য তুলে দেওয়ার জন্য অবশেষে তাকে ঢাকাতে পাড়ি জমাতে হলো। সেখানে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকার উলিয়াম সোয়েটার লিমিটেড নামে মেন্ডিং অপারেটর পদে চাকুরী নেয়। দু’বছর পূর্বে তার স্বামী তাকে ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমান। নিয়তির কাছে সে কি অপরাধ করেছিল? সেওতো আর দশ জনের মত দু’মুঠো খেয়ে-পড়ে সুন্দরমত বাঁচতে চেয়েছিল। ২৩ শে অক্টোবর কাজের শেষে সে যখন কারখানা থেকে বাসায় ফিরছিল তখন সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিট সময় হঠাৎ পিছন থেকে একটি দ্রুতগমী ট্রাকের ছোঁবলে পড়ে। পরে শিল্প শ্রমিকদের সহায়তায় তাকে হাবিব ক্লিনিেিক নিলে তার প্রচুর রক্ত খনন হওয়ায় সেখান থেকে তাকে এনাম মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সেখানের আইসিইউ’তে ৭ দিন ধরে রাখার পরে পরপর ৬টি অপারেশন করা হলে তার শাররীক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়। এতে তার মেডিকেল বিল আসে ৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত দয়াবানদের সাহায্যের বিনময়ে ৮০ কোনমতে হাজার টাকা সংগ্রহ করে মেডিকেলের বিল দেওয়া হয়। ৩ মাস পরে তার আর একটি অপারেশন করতে হবে এই টাকা এবং মেডিকেলের বাকি টাকা কোথায় পাবে এ চিন্তায় অসুস্থ রাশেদা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। হাত-পা ও মাজা ভেঙ্গে যাওয়া বর্তমানে সে মেডিকেলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। একদিকে স্বামী হারানো কষ্ট অন্যদিকে বৃদ্ধ বাবা-মা এবং নিজের চিকিৎসার টাকার যোগান কোথায় পাবে এবং কে দেবে তার অর্থের যোগান? এই চিন্তায় সে ভেঙ্গে পড়ল। সরেজমিনে মেডিকেলে তাকে দেখতে গেলে কে শুনবে আমার আর্তনাদ এই বলে সে কান্নায় বিলাপে সাথে অসুস্থ রাশেদা বল্ল, ভাই এই মেডিকেলে ২ মাস ৭ দিন ধরে আমার চিকিৎসা চলছে এতে আমার ৬ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা বিল হয়েছে। আর ৩ মাস পর আর একটি অপারেশন করতে হবে এতো টাকা আমি কোথায় পাব? অনেক হৃদয়বান ব্যক্তি অছেন, আপনারা যদি আমাকে একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে আপনাদের এই দান-দাক্ষিণায় হয়তো আমি একটি সুন্দর জীবন ফিরে পাবো বলে রাশেদা জানায়।