কোহলিদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন মুস্তাফিজের হায়দ্রাবাদ


স্পোর্টস ডেস্ক:
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) নবম আসরে বিরাট কোহলির রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। ফাইনালের মঞ্চে ৮ রানে কোহলি-গেইল-ভিলিয়ার্স-ওয়াটসনদের হারায় মুস্তাফিজ-ওয়ার্নার-যুবরাজ-ধাওয়ানরা।
বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন হায়দ্রাবাদের দলপতি ডেভিড ওয়ার্নার। নির্ধারিত ২০ ওভরে ৭ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওয়ার্নার বাহিনী ২০৮ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়। জবাবে, গেইল-কোহলির ক্যামিও ইনিংসের পরও ২০০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে থেমে যেতে হয় বেঙ্গালুরুকে।
হায়দ্রাবাদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন দলপতি ওয়ার্নার এবং শিখর ধাওয়ান। ওপেনিং জুটিতেই তারা তুলে নেন ৪০ বলে ৬৩ রান। শিখর ধাওয়ান ২৫ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় করেন ২৮ রান। দলপতি ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে আসে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৯ রান। তার ৩৮ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল ৮টি বাউন্ডারি আর তিনটি ওভার বাউন্ডারির মার। ২৪ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন ওয়ার্নার।
ওয়ান ডাউনে নামা হেনরিকস ৪ রান করে বিদায় নেন। চার নম্বরে নেমে ২৩ বলে চারটি চার আর দুটি ছক্কায় ৩৮ রান করে বিদায় নেন যুবরাজ সিং। দীপক হুদা ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর ব্যাটে ঝড় তোলেন বেন কাটিং। মাত্র ১৫ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ব্যাট থেকে তিনটি চারের পাশাপাশি চারটি বিশাল ছক্কার মার দেখা যায়।
বেঙ্গালুরুর হয়ে ৪ ওভারে ৪৫ রান খরচায় তিনটি উইকেট দখল করেন ক্রিস জর্ডান। দুটি উইকেট পান ৪ ওভারে ৩০ রান দেওয়া আরভিন্দ। শেন ওয়াটসনের নামের পাশে কোনো উইকেট না থাকলেও ছিল ৪ ওভারে সর্বোচ্চ ৬১ রান দেওয়ার বাজে পারফর্ম। গেইল ৩ ওভারে ২৪ রান দিয়ে উইকেট শূন্য ছিলেন।
২০৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাটে ঝড় তোলেন ক্যারিবীয় তারকা ক্রিস গেইল। ১১তম ওভারে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৭৬ রান। তার ৩৮ বলে সাজানো ইনিংসে ছিল চারটি চার আর আটটি ছক্কা। ওপেনিং জুটি থেকে কোহলির সঙ্গে ৬৩ বলে ১১৪ রান তোলেন গেইল। ২৫ বলে অর্ধশতকের দেখা পান ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব।

গেইল ফিরে গেলেও কোহলির ব্যাট থেমে থাকেনি। ৩২ বলে ভারতীয় এই রানমেশিন অর্ধশতক হাঁকান। ৫টি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৫ বলে ৫৪ রান করে বারিন্দ্রার স্রানের বলে বোল্ড হন কোহলি।
মুস্তাফিজ নিজের প্রথম ওভারে ৪ রান খরচ করেন। তার করা দ্বিতীয় ওভারে বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানরা আরও ১২ রান তুলে নেয়।
কোহলির বিদায়ের পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন এবিডি ভিলিয়ার্স এবং লোকেশ রাহুল। উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই বিপুল শর্মার বলে হেনরিকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ভিলিয়ার্স (৫)। ভিলিয়ার্সের বিদায়ে মাঠে নামেন অজি তারকা শেন ওয়াটসন। বেন কাটিং ইনিংসের ১৬তম ওভারে বোল্ড করেন ১১ রান করা রাহুলকে।
ইনিংসের ১৭তম ওভারে নিজের তৃতীয় ওভার করেন মুস্তাফিজ। সেই ওভারের তৃতীয় বলে দুর্দান্ত এক স্লোয়ার কাটারে ওয়াটসনকে কাবু করেন মুস্তাফিজ। হেনরিকসের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন ৯ বলে ১১ রান করা ওয়াটসন। মুস্তাফিজের তৃতীয় ওভার থেকে বেঙ্গালুরুর ব্যাটসম্যানরা তুলে নেন ১০ রান।
১৯তম ওভারে আবারো বোলিং আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজ। তার করা প্রথম বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন স্টুয়ার্ট বিন্নি। দ্বিতীয় বলে ক্রিস জর্ডান ক্যাচ তুলে দিলেও বারিন্দ্রান স্রানের হাত ফসকে বল বেরিয়ে যায়। মুস্তাফিজের শেষ ওভারে বেঙ্গালুরু নেয় আরও ১২ রান।
ভুবনেশ্বর কুমারের করা শেষ ওভারে জয় পেতে হলে বেঙ্গালুরুর দরকার ছিল ১৮ রান, হাতে ছিল ৪ উইকেট। তৃতীয় বলে রান আউট হন ক্রিস জর্ডান। শচীন বেবি ১০ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। ২০ ওভার শেষে বেঙ্গালুরুর ইনিংস থামে ২০০ রানে।
হায়দ্রাবাদের হয়ে ৪ ওভার বল করে ৩৭ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। ৪ ওভারে ৩৫ রান খরচায় দুটি উইকেট পান বেন কাটিং। ভুবনেশ্বর ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি।

Comments (0)
Add Comment