খুলনা-মংলা রেললাইন, জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক কাজ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার:

খুলনা অঞ্চলে বসবাসকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি খুলনা-মংলা রেললাইন। এই দাবির সঙ্গে একমত হয়ে ২০০৮ সালে তা নির্মাণের প্রতিশ্র“তি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অবশেষে খুলনাবাসীর সেই দাবি ও লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে রেললাইন নির্মাণে জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্র“ত এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে একদিকে যেমন ‘মৃতপ্রায়’ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মংলা সচল হবে। অন্যদিকে বন্দর থেকে বিভিন্ন পণ্য খুলনাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহন করার কাজটিও সহজ হবে। এ অঞ্চলে দেশ-বিদেশের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগেও আগ্রহী হবেন, সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ২০১২ সালের ১৪ জুন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ভারতের কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ার্স গ্র“প লিমিটেড ও নিপ্পন কোয়েই ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডকে।
নকশায় দেখানো হয়েছে, খুলনার ফুলতলা থেকে মংলা পর্যন্ত লাইনে মোট আটটি স্টেশন হবে। এগুলো হচ্ছে- ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদ নগর, কাটাখালী, চুলকাঠি, ভাগা, দিগরাজ ও মংলা। রেললাইনটি খুলনার ফুলতলা থেকে শুরু করে বাইপাস সড়কের পশ্চিম হয়ে রূপসা সেতুর দক্ষিণ পাশ দিয়ে কাটাখালী থেকে মংলা পর্যন্ত যাবে। স্টেশনে ও মংলা বন্দরের অভ্যন্তরে মালামাল পরিবহনের জন্য দুটি সংযোগ লাইন নির্মিত হবে। এছাড়া রূপসা নদীর উপরে হযরত খানজাহান আলী (রহ.) সেতুর দেড় কিলোমিটার দূরে যুক্ত হবে রেল সেতু। খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মাণের পরামর্শক প্রকৌশলী শিশির কুমার শীল বলেন, “প্রকল্পে খুলনা অংশের ৪০০ একর, বাগেরহাট অংশের ২৭৮ একর এবং পোর্ট এলাকার ৭৩ একর জমি অধিগ্রহণের দরকার। এতে ২১টি ছোট সেতু এবং ১১০টি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটির জন্য নকশা তৈরির কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।”
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। আর তা ২০১৮ সালে ৩০ জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তিন অংশে বিভক্ত ওই প্রকল্পে একটি রেল সেতু, অপরটি রেল লাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং কাজ শুরু হবে। খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের সার্বিক কাজ দ্রুততার সঙ্গেই এগিয়ে চলছে। এরইমধ্যে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।”খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান বলেন, “দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মাণের। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলের মানুষের সে স্বপ্ন পূরণ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে খুলনা-মংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।” তিনি বলেন, ‘মৃতপ্রায়’ দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মংলা সচলের পাশাপাশি এখানকার বিনিয়োগ বাড়বে। সেই সঙ্গে জেগে উঠবে খুলনার রুগ্ন শিল্প কারখানাও।

Comments (0)
Add Comment