ডাবের পানি যেমন সুস্বাদু তেমনই পুষ্টিকর। গরমের দুপুরে ক্লান্ত দেহে শক্তি যোগাতে ডাবের পানির বিকল্প নেই। একটি সাধারণ কচি ডাবে আকারভেদে ২০০ থেকে ১০০০ মিলিলিটার পানি থাকতে পারে, এর ৯৫ শতাংশই পানি।
এছাড়া ডাবের পানিতে সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও অন্যান্য লবণের পরিমাপ স্থানভেদে একেক রকম হয়। তবে সাধারণভাবে এক লিটার ডাবের পানিতে পটাশিয়াম আছে ৩৫ থেকে ৮২ মিলিমোল, সোডিয়াম ০.৭ থেকে ০.৯ মিলিমোল ও শর্করা ১.২ থেকে ২.৮ মিলিমোল।
অন্যদিকে এক লিটার স্যালাইনে পটাশিয়ামের পরিমাণ ২০ মিলিমোল, সোডিয়াম ৭৫ মিলিমোল ও শর্করা ৭৫ মিলিমোল। গরমে অতিরিক্ত ঘেমে দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই আসুন জেনে নেয়া যাক আপনাকে সুস্থ রাখতে ডাবের পানির গুণ সম্পর্কে:
১। ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে, পানিশূন্যতা প্রতিরোধ এবং শক্তির উৎস হিসেবে কচি ডাবের পানি ভীষণ কার্যকর।
২। অতিরিক্ত গরমে উচ্চরক্তচাপ হতে পারে। ডাবের পানির প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে।
৩। ডাবের পানি হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অন্যান্য কার্ডিওভাসকুলার বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৪। ডাবের পানিতে রয়েছে মিনারেল, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা কিডনির বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৫। ডাবের পানি দেহের অতিরিক্ত সুগার লেভেলকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৬। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ডাবের পানিকে খাওয়ার স্যালাইনের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। ডায়রিয়া বা বমির পর পানিশূন্যতা দূর করতে ডাবের পানির ব্যবহার প্রচলিত।
৭। ওজন কমাতে ডাবের পানির বিকল্প নেই। ডাবের পানি ক্ষুধা নিবারণে খুবই কার্যকর। তাই বেশি বেশি খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। এতে ওজন কমে যায়।
৮। ডাবের পানিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন যেমন রিবোফ্লেবিন, নিয়াসিন, থায়ামিন এবং পেরিডক্সিন রয়েছে।
৯। এতে অ্যান্টি ভাইরাল এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। যা দেহে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ফলে দেহকে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে এ পানি।
১০। গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসকরা প্রায়ই ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন। কারণ এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হার্টের সমস্যা নিরসন করে এবং হজম ক্রিয়ায় সহায়তা করে।
১১। একটি ডাবের পানিতে চারটি কলার সমান পটাশিয়াম আছে, সেই সঙ্গে আছে সহজ শর্করা বা চিনি, যা সহজে শোষিত হয়ে শক্তি দিতে পারে।
১২। ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর সোডিয়াম ক্লোরাইড ও শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য পুষ্টি।
১৩। এতে পটাশিয়াম আছে প্রচুর পরিমাণে। বমি হলে মানুষের রক্তে পটাশিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। ডাবের পানি পূরণ করে এ ঘাটতি। অতিরিক্ত গরম, ডায়রিয়া, বমির জন্য উৎকৃষ্ট পানীয় ডাবের পানি।
১৪। ডাবের পানি মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
১৫। ডাবের পানি ত্বকের জন্য খুব ভালো। এটি শুধু মুখের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দেয় না, পাশাপাশি তারুণ্যও বজায় রাখে।
১৬। উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম রয়েছে ডাবের পানিতে, যা হাড়কে করে মজবুত। সেই সঙ্গে জোগায় ত্বক, চুল, নখ ও দাঁতের পুষ্টি।