ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে দুস্থ্য ও অসহায়দের ভিজিডি কার্ড দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় এক ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে টাকা আতœসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ১নং ইউনিটের কেএম ডাঙ্গীর(খান মাহমুদ ডাঙ্গী) গ্রামে।
জানা যায়, ৩নং উপজেলা সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মোঃ পান্নু ফকির(৩২) গত ১০/১৫ দিন আগে তার নিজ ওয়ার্ডের দুস্থ,অসহায়,গরীব ও রোজগার খেটে খাওয়া মেহনতি ১। শেখ বেলাল, পিং- শেখ বদরুদ্দিন ২। শেখ মোস্তফা, পিং- শেখ আলতাফ ৩। সোবান মোল্যা, পিং- গুঞ্জর আলী মোল্যা ৪। আকাচ্ছ শেখ, পিং- শেখ গেন্দু ৫। শেখ ওবায়দুর, পিং- শেখ ফজল ও ৬। সোরাব খান, পিং- মৃতঃ মজিদ খান এর কাছ থেকে একই গ্রামের হায়দার শেখের মাধ্যমে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার নাম করে ২ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানান।
এঘটনায় গত শনিবার উক্ত গ্রামটি সরেজমিনে ঘুরে কার্ডের জন্য টাকা দেওয়া বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আমরা গ্রাম গঞ্জের খেটে খাওয়া গরীব ও অসহায় মানুষ। আমরা শুনেছি আমাদের বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার আমাগো লাইগা কত রহম সুযোগ-সুবিধা দিতাছে। আমাগোরে শুুনছি শিশুু কার্ড, ভিজিডি কার্ড, ভিজিএফ কার্ড সহ আরও কত রহম কার্ড কইরা দিছে অমাগো লাইগা। তারিই আশায় আমরা আমাগো ওয়ার্ডের মেম্বাররে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার কতা কইলে সে আমাগোরে মিথ্যা আশা দিয়া ওর দালাল একই গ্রামের মৃতঃ লালামিয়া শেখের পুত্র হায়দার শেখরে দিয়া আমাদের কাছ থেইকা দুই হাজার কইরা ট্যাকা নিয়া, এখন আমাগোরে ট্যাকাও ফেরত দেয়না, আমাগোরে ভিজিডি কার্ডও দেয়না। এমনেই আমাগো নুন আনতে পান্তা ফুরায়। একবেলা কোন রহম খাই, কোন বেলা না খাই থাহি। অহন আপনারাই কন, আমারা রোজ আনি রোজ খাই। তার ওপর আবার আমরা দুই হাজার ট্যাকা দিয়া বৌ, ছোট-ছোট পোলাপইন ও বুড়া মা-বাবাগো লইয়া কেমনে বাইচাঁ থাকুম, অহন আমাগোরে মরা ছাড়া কোন গতি নেই বলে তারা এসময় জানান।
তারা এসময় আরও জানান, আমরা আমোগো ট্যাকা ফেরত চাইলে ওই হায়দার শেখ ও মেম্বার পান্নু ফকির এই তোদের কার্ড অইয়্যা গেছে বলে আমাগোরে থামাইয়া রাখে, আমাগোরে অহন কার্ডও দেয়না ট্যাকাও ফেরত দেয়না। এদিকে এ ঘটনায়, উক্ত ইউপি মেম্বার পান্নু ফকিরের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে, প্রথমে তিনি কথা বলতে রাজি হলেও পরে তার সাথে বার বার সাক্ষাতে ও মঠোফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। অপরদিকে মেম্বারের দালাল ও উক্ত ভূক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হায়দার শেখের বাড়ীতে গেলেও তাকে তার বাড়ীতে পাওয়া যায়নি। ফলে তার কাছ থেকে উক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে মুঠোফোনেও তাকে অনেক বার চেষ্টা করে ফোন ডুকলেও সে তার ফোনটি কেটে দেয় ও পরে ফোনটি এক পর্যায় তিনি বন্ধ করে রাখেন বলে ধারনা করা হয়।
এদিকে এবিষয়ে, রবিবার সকালে সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজাদ খানের কার্যালয়ে উক্ত ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমিও মেম্বারের বিরুদ্ধে জনগনের কাছ থেকে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। এবং এই একটি ছেলের জন্যই আজ আমাদের পুরো ইউনিয়ন পরিষদের সকলের বদনাম হতে চলেছে। তিনি এসময় আরও জানান, আমি এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উক্ত পান্নু মেম্বারকে বলেছি তুমি যদি কোন জনগনের কাছ থেকে তাদেরকে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার নাম করে কোন টাকা নিয়ে থাক, তাহলে তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দাও বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজ আমাদের সকল ইউপি মেম্বারদের নিয়ে পান্নু মেম্বারের জনগনের কাছ থেকে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার বিষয়ে বসব। সে যদি সত্ত্যিই, সত্ত্যিই জনগনের কাছ থেকে কার্ড দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে থাকে। তাহলে, আমরা তাকে তার ইউনিয়ন পরিষদের পদ থেকে তাকে অপসারন করার সিন্ধ্যান্ত নিব বলেও তিনি এসময় জানান।