রবিবার (৯ অক্টোবর) রাতে পুলিশ লাশের ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি উঠছে। নিহত ফাতেমা জান্নাত ঝিলিক মেহেরপুর শহরের মন্ডলপাড়ার সোহেল রানা ঝন্টুর মেয়ে। সে এবার মেহেরপুর সরকারী মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির পাশ্ববর্তী নানার বসতবাড়ির ঘরে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করে ঝিলিক। পরিবারের লোকজন ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি দল লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। সেখান থেকে উদ্ধার করা ঝিলিকের লিখে যাওয়া চিরকুটে নোটে মৃত্যুর জন্য প্রেমিকের ফুফু হিরা খাতুন ও তার পরিবারের সদস্যদের দায়ী করে গেছে ঝিলিক। এর সূত্র ধরেই তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে হিরাকে আটক করতে সক্ষম হন সদর থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী ও ওসি-তদন্ত মেহেদি হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাতেই নিহতের বাবা বাদি হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের মা পারুল খাতুন ও পরিবারের অভিযোগ, মন্ডলপাড়ার মাসুদ হোসনের ছেলে মেহেরপুর সরকারি কলেজের ছাত্র নিলয় হোসেনের সঙ্গে ঝিলিকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি তারা জানতেন না। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি ভালভাবে নেয়নি নিলয়ের পরিবার। এর জেরে শনিবার দুপুরে নিলয়েল ফুফু হিরা খাতুন আসেন ঝিলিকের কাছে। নানাভাবে ঝিলিক ও তার পরিবারের সদস্যদের শাসাতে থাকে। এক পর্যায়ে ঝিলিককে চড়-থাপ্পড় মারেন তিনি। নিলয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে এর চেয়েও বড় পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দেয় হিরা।
তবে হিরার পরিবার তাদের চেয়ে প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। প্রেমের কারণে মারধরে পরিবারের মান-সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে বলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে সুইসাইড নোটে উল্লেখ করে গেছেন ঝিলিক। তার মৃত্যুর জন্য সে হিরা খাতুন ও তার পরিবারের সদস্যদের দায়ী করেছেন।
মেহেরপুর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চিরকুট ও পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে। বিভিন্ন স্থানে অভিযানের এক পর্যায়ে হিরা খাতুনকে আটক করা হয়। মামলার অপর আসামিদের আটকে অভিযান চলছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর ও হিরাকে আলাদতে সোপর্দের প্রক্রিয়া চলছে।